close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

যুদ্ধবিরতির ফাঁদে পা দিচ্ছে না হামাস: ‘নেতানিয়াহুর রাজনীতি’র ফাঁদ বলে প্রত্যাখ্যান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল ইসরায়েল, কিন্তু তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। হামাস বলছে, নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ এটি—আংশিক কোনো চুক্তি তারা মানবে না। পাল্টা বার্তায় ইসরা..

ফিলিস্তিনের দৃঢ় ‘না’—ইসরায়েলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

গাজায় চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের মাঝে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, যেখানে ৪৫ দিনের জন্য যুদ্ধ স্থগিত রেখে ১০ জন ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। তবে এ প্রস্তাবকে সরাসরি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামাসের শীর্ষ আলোচক খলিল আল-হায়্যা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমরা কোনোভাবেই ইসরায়েলের আংশিক সমাধানে রাজি নই। এটি নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ। আমরা চাই সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, সকল বন্দির বিনিময় এবং গাজায় গণহত্যার স্থায়ী অবসান।”

হামাসের অবস্থান: সর্বাত্মক সমঝোতা না হলে চুক্তি নয়

হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েলের প্রস্তাব কেবলমাত্র কৌশলগত যুদ্ধবিরতির ছল, যেখানে মানবিক ইস্যুকে ব্যবহার করে সাময়িক যুদ্ধবিরতি নেয়া হচ্ছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো স্থায়ী নিরাপত্তা নেই।

হামাস জানিয়েছে, গাজায় বর্তমানে ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র ২৪ জন জীবিত বলে জানা গেছে। তাদের মতে, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিপরীতে তারা চায় ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং যুদ্ধের পূর্ণ সমাপ্তি।


ইসরায়েলের পাল্টা হুমকি: ‘জাহান্নামের দরজা’ খুলে দেব

ইসরায়েলি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে তেলআবিব। ইসরায়েলের উগ্রপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বলেন, “এখন সময় এসেছে হামাসের বিরুদ্ধে জাহান্নামের দরজা খুলে দেওয়ার।”

এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি বিমান বাহিনী গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালায়, যেখানে ৩৭ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন বাস্তুচ্যুত নারী ও শিশু।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের ফলে আশ্রয়দাতা তাঁবুগুলিতে আগুন লেগে যায় এবং মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে।


মানবিক সংকট তীব্র হচ্ছে, ত্রাণপ্রবাহ প্রায় বন্ধ

গাজার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, ১২টি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা একযোগে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে—‘মানবিক ব্যবস্থাপনা প্রায় ধসে পড়েছে।’

গাজায় ত্রাণ প্রবেশ প্রায় বন্ধ, ফলে লাখো মানুষ ক্ষুধা, অনাহার ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর মুখে। তবে ইসরায়েল দাবি করছে, তারা ত্রাণে বাধা দিচ্ছে না; বরং হামাসই নেপথ্যে এ বাধা সৃষ্টি করছে।


স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ঘটনাকে

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইতিহাসের এক ভয়াবহ দিন ছিল ইসরায়েলের জন্য। হামাসের আকস্মিক হামলায় সেদিন ১,২০০ জন ইসরায়েলি নাগরিক প্রাণ হারান এবং ২৫১ জন জিম্মি হন।

এর জবাবে ইসরায়েল শুরু করে সর্বাত্মক প্রতিশোধমূলক অভিযান। সেই অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫১ হাজার ৬৫ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।


শেষ কথা: যুদ্ধ থামবে না, যদি শর্ত না মানে ইসরায়েল

সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি পক্ষ এখনো শক্ত অবস্থানে অনড়—তারা শুধুমাত্র সর্বাত্মক চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিতে যেতে রাজি। অন্যদিকে, ইসরায়েলও রাজনৈতিক চাপ এবং অভ্যন্তরীণ দাঙ্গার মধ্যে থেকে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

গাজায় রক্তক্ষয় বন্ধ হবে কি না, তা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং উভয়পক্ষের অন্তত ন্যূনতম মানবিক অবস্থান গ্রহণের ওপর।

Nema komentara


News Card Generator