close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

যুদ্ধবিরতির দাবি মানেনি তেলআবিব: গাজা নিয়ে চিঠি দেয়ায় বরখাস্ত ১ হাজার ইসরায়েলি সেনা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের গাজা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে খোলা চিঠি—রাজনৈতিক স্বার্থে যুদ্ধের অভিযোগ! তীব্র বার্তা সেনাপ্রধানের: 'তারা সেনাবাহিনীতে থাকার যোগ্য নয়'— বরখাস্ত ১,০০০ রিজার্ভ সেনা।..

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভ্যন্তরীণ প্রতিবাদের ঘটনা সামনে এসেছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে খোলা চিঠি দেওয়ার কারণে প্রায় এক হাজার রিজার্ভ সেনাকে বরখাস্ত করেছে দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষ। এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন ইসরায়েলের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়াল জামির। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে যখন কয়েকশ রিজার্ভ সদস্য, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছিলেন ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর (IAF) সাবেক ও বর্তমান কর্মী, তারা গাজায় চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। চিঠিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়— "এই যুদ্ধ নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নয়, বরং এটি একধরনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।"

তারা আরও যুক্তি দেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা সামরিক অভিযান দিয়ে বন্দি মুক্তি সম্ভব নয়; বরং যুদ্ধবিরতির পথেই কূটনৈতিকভাবে সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই খোলা চিঠিকে সেনাবাহিনীর প্রতি একটি গুরুতর ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে দেখছে তেলআবিব। সেনাপ্রধান আইয়াল জামির বলেছেন, "যারা নিজেদের বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে সেনাবাহিনীর আদেশ অমান্য করে, তারা কখনোই আর বাহিনীতে ফিরে আসতে পারে না।"

অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এই চিঠিকে 'অসাংবিধানিক ও বিপজ্জনক' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, "এটি যুদ্ধের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।"

এই চিঠির পেছনে কেবল সাধারণ সেনারাই ছিলেন না, বরং রয়েছেন সাবেক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারাও। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ড্যান হালুৎস, সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) নিমরড শেফার এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান কর্নেল (অব.) নেরি ইয়ারকোনির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।

তাদের মতে, ইসরায়েলি জনমতকে এমন এক জায়গায় পৌঁছে দেওয়া জরুরি, যেখানে যুদ্ধ নয় বরং মানবিক মূল্যবোধ ও কূটনৈতিক সমঝোতার পথকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। তারা দেশটির সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন সবাই মিলে বন্দিদের মুক্তির জন্য যুদ্ধবিরতির দাবিতে চাপ সৃষ্টি করে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বরখাস্ত হওয়া এই ১,০০০ সেনার মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ এখনো সক্রিয়ভাবে রিজার্ভ ডিউটিতে নিযুক্ত ছিলেন, বাকিরা অবসরপ্রাপ্ত কিংবা পূর্বের রিজার্ভ সদস্য।

এই ঘটনাটি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও সামরিক অবকাঠামোর মধ্যে একটি গভীর বিভক্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাধারণত যুদ্ধের সময় বাহিনীর অভ্যন্তরে এমন বিদ্রোহ বিরল হলেও, গাজার মতো সংবেদনশীল ইস্যুতে সেনাদের প্রকাশ্য প্রতিবাদ নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনা কেবল ইসরায়েলের নিরাপত্তা-নীতি নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনার দর্শনের ওপরও বড় প্রশ্নচিহ্ন টেনে দিয়েছে।

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator