close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

যু ক্তরা ষ্ট্রের যু দ্ধজা হাজ ল ক্ষ্য ই রানে র? বাড়ছে মধ্য প্রাচ্যে উত্তে জ না!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে মার্কিন হামলার পাল্টা জবাব কি দেবে তেহরান? যুদ্ধজাহাজে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান! পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর—বিশ্বজুড়ে ছড়াচ্ছে উদ্বেগ।..

বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে ফের উত্তপ্ত আবহ। ইরানের অভ্যন্তরে মার্কিন হামলার পরিণাম এখন গোটা মধ্যপ্রাচ্যকেই ভয়াবহ সংঘর্ষের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

গত ২১ জুন রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন সেনাবাহিনীর আচমকা হামলা মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের উত্তেজনাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। এই হামলার মাধ্যমে শুধু ইসরায়েল-ইরান নয়, সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রও এখন যুদ্ধের ময়দানে প্রবেশ করল। অথচ মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় নিতে চান। কিন্তু তার আগেই বাস্তবতা বদলে যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার জবাবে ইরান যে চুপচাপ বসে থাকবে না, তা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

বিবিসির প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ফ্র্যাঙ্ক গার্ডনার মনে করেন, ইরান এখন তিনটি পথের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে পারে।

প্রথম পথ হলো—সম্পূর্ণ নীরব থাকা। অর্থাৎ সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে কূটনৈতিক পথে ঝুঁকে পড়া। এতে হয়তো তারা আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে সক্ষম হবে এবং ভবিষ্যতের হামলা এড়াতে পারবে। তবে এর ঝুঁকিও কম নয়। ইরানের নেতৃত্ব যদি জনতার প্রতিক্রিয়া ও জাতীয় মর্যাদার বিষয়টি আমলে নেয়, তাহলে একে দুর্বলতা হিসেবে গণ্য করা হতে পারে। এবং এর ফলে সরকারের ওপর জনআস্থা মারাত্মকভাবে নষ্ট হতে পারে।

দ্বিতীয় পথটি অনেক বেশি আগ্রাসী। প্রতিশোধমূলক হামলা—তা হতে পারে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিতে বা তাদের সমুদ্রপথে চলমান নৌবাহিনীর জাহাজের ওপর। গার্ডনারের মতে, ইরানের কাছে বহু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ রয়েছে, যেগুলো বহুদিন ধরে গোপনে তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে ড্রোন, দ্রুতগামী হামলাযান, এবং ছোট-মাঝারি পরিসরের শক্তিশালী অস্ত্র।

এসব অস্ত্রের সহায়তায় ইরান একযোগে একাধিক মার্কিন ঘাঁটিতে আঘাত হানতে পারে। আর সবচেয়ে বড় হুমকির জায়গা হতে পারে পারস্য উপসাগরে অবস্থানরত মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলো। অতীতে দেখা গেছে, ইরান তার ছোট আকারের, উচ্চগতিসম্পন্ন নৌযানের মাধ্যমে ‘ঝাঁক আকারে’ হামলার কৌশল নিতে অভ্যস্ত।

তৃতীয় পথটি সবচেয়ে কৌশলী এবং দীর্ঘমেয়াদী। ইরান চাইলে এখনকার উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে। পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক বলে মনে হবে, তখনই হঠাৎ করে মার্কিন স্বার্থের ওপর এক মারাত্মক আঘাত হানতে পারে তারা। এমন আঘাত হতে পারে ইরানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি বা তাদের মিত্রদের স্থাপনায়।

এই ধরনের হামলা শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেই নয়, গোটা অঞ্চলকেই উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনসহ বেশ কিছু উপসাগরীয় দেশ ইরানের রাডারে থাকতে পারে, যাদেরকে তারা মার্কিন মিত্র বলে বিবেচনা করে।

তবে এই প্রতিশোধমূলক হামলা শুধু মার্কিন-ইরান উত্তেজনাকে বাড়াবে না, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও জ্বালানি সরবরাহ শৃঙ্খলকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে। কারণ, পারস্য উপসাগর দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি হয়। যদি সেই পথ অবরুদ্ধ হয়, তাহলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ভয়াবহ মন্দার সূচনা হতে পারে।

বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, যদি পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তবে সেটি নতুন এক ‘প্রক্সি ওয়ার’ বা সরাসরি যুদ্ধের রূপ নিতে পারে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, ইরান ও ইসরায়েলের পাশাপাশি আরব দেশগুলোও জড়িয়ে পড়তে পারে।

ইরান এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। তারা কি প্রতিশোধে যাবে, না কি কৌশলগত শান্তিপথে? বিশ্ববাসী এখন উদ্বেগ আর শঙ্কার দোলাচলে।

Комментариев нет