যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা, কারণ আরাগচির রাশিয়া গমন শুধুমাত্র কূটনৈতিক সৌজন্য নয়—বরং এটি একটি কৌশলগত সংকেত। সোমবারই তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবেন বলে জানিয়েছেন।
বর্তমানে তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থান করছেন ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য। সেখান থেকেই এক সংবাদ সম্মেলনে রোববার তিনি ঘোষণা করেন, আমি আগামীকাল রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব এবং আমরা একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।
আরাগচি আরও বলেন,রাশিয়া ইরানের বন্ধু। আমাদের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব রয়েছে এবং আমরা বিভিন্ন ইস্যুতে সবসময় একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করে আমাদের অবস্থান সমন্বয় করি।
এ বক্তব্যের মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, ইরান ও রাশিয়া পারস্পরিক নির্ভরশীলতার বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে।
এ সময় তিনি মনে করিয়ে দেন, রাশিয়া ছিল ইরানের পারমাণবিক চুক্তি (জেসিপিওএ)-এর অন্যতম স্বাক্ষরকারী। যুক্তরাষ্ট্র যখন এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে, তখনও রাশিয়া চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিল। ফলে এখন এই মুহূর্তে পুতিন ও আরাগচির আলোচনা শুধু দুই দেশের জন্যই নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে কৌশল নির্ধারণ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিপরীতে রাশিয়া-ইরান যৌথ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার রূপরেখাও চূড়ান্ত হতে পারে।
তুরস্ক থেকে মস্কো যাত্রার মাধ্যমে আরাগচির এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন পশ্চিমা বিশ্ব ইরানকে ঘিরে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে।
এই প্রেক্ষাপটে আরাগচি-পুতিন বৈঠককে কেবল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে না দেখে, এটি একটি কৌশলগত বার্তা হিসেবে দেখছে বিশ্ব রাজনীতি। হয়তো এই বৈঠক থেকেই শুরু হবে নতুন এক মেরুকরণের অধ্যায়।