যু ক্ত রা ষ্ট্র কে রা শি য়া র হুঁ শি য়া রি : ই রা ন ইস্যুতে হ স্ত ক্ষে প করলে ভ য়া ব হ পরিণতি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হলেও, রাশিয়ার হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। মস্কো সাফ জানিয়ে দিয়েছে—ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করলে তা গোটা অঞ্চলকে টেনে নিয়ে যাবে ভয়াবহ বি..

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান সংঘাত নিয়ে যখন গোটা বিশ্ব উদ্বিগ্ন, ঠিক তখনই রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে প্রকাশ্যভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে—এই সংকটে হস্তক্ষেপ করলে এর ফলাফল হবে ভয়াবহ এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন

আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই উত্তেজনায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করে, তাহলে তা পুরো পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।

এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠেছে। দুই দেশের মধ্যে আকাশপথে হামলা-পাল্টা হামলার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত আসছে।

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া
যুক্তরাষ্ট্র, যার পুরনো মিত্র ইসরায়েল, সেখানে রাশিয়া প্রকাশ্যে তেহরানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। রাশিয়া বলছে—ইসরায়েল অকারণে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এ ধরনের আচরণ বিশ্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে ‘নির্মম ও অযৌক্তিক’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলকে অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিতে থাকে, তাহলে গোটা অঞ্চলই বিস্ফোরণে পরিণত হবে।

চলতি বছরেই রাশিয়া ও ইরান কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যেখানে স্পষ্টভাবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তি শুধু প্রতীকী নয়, বরং বাস্তবের যুদ্ধনীতি নির্ধারণেও বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে।

ইরান ইতোমধ্যেই রাশিয়াকে শাহেদ সিরিজের ড্রোন সরবরাহ করছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই সহযোগিতা রাশিয়া-ইরান সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করেছে এবং উভয়ের সামরিক কৌশল একসূত্রে গেঁথে ফেলেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পথে রয়েছেন, তিনি ইরানের ‘নির্বিশর্ত আত্মসমর্পণ’-এর দাবি তুলেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে, প্রয়োজন হলে সামরিক পদক্ষেপ নিতেও তারা পিছপা হবে না।

এই অবস্থান রাশিয়ার দৃষ্টিতে এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা বলেই বিবেচিত হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই উত্তেজনা শুধু ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমান অবস্থান ১৯৮০ দশকের ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ যুগের পুনরাবৃত্তির দিকে ইঙ্গিত করছে।

বিশেষ করে ট্রাম্পের সম্ভাব্য পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়া এবং রাশিয়ার পুতিনের আক্রমণাত্মক কূটনৈতিক কৌশল — উভয় মিলে বিশ্ব নিরাপত্তাকে অস্থির করে তুলতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—যুক্তরাষ্ট্র কি সত্যিই ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে সরাসরি প্রবেশ করবে? আর যদি করে, তবে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে?

বিশ্ববাসী তাকিয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্যের আকাশপানে, যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে অগ্নিগর্ভ উত্তেজনা। রাশিয়ার হুঁশিয়ারি যদি সত্য হয়, তাহলে একটি ছোট সীমান্ত যুদ্ধ নয়—আমরা হয়তো তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছি।

No comments found


News Card Generator