যু দ্ধ বিরতিতে এখনো স্বীকৃতি দেননি ই রা নের সর্বোচ্চ নেতা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে প্রেসিডেন্ট সম্মত হলেও আয়াতুল্লাহ খামেনির নীরবতা বিশ্বে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কেন মুখ খুলছেন না সর্বোচ্চ নেতা?..

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা একদিকে আন্তর্জাতিক মহলে স্বস্তির বার্তা দিলেও, অন্যদিকে তৈরি করেছে নতুন এক অনিশ্চয়তা। কারণ, দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির দিক থেকে এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। অথচ ইরানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে তার মুখ থেকেই।

গতকাল ইরানের রাষ্ট্রপতি ও কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন যে, ইরান যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হয়েছে এবং তারা সাময়িক শান্তির সুযোগে কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী। এমন ঘোষণার পর আশা করা হচ্ছিল আয়াতুল্লাহ খামেনি খুব দ্রুতই বিষয়টি স্বীকৃতি দিয়ে জাতিকে আশ্বস্ত করবেন। কিন্তু তা এখনও হয়নি। ফলে ভেতরে-বাইরে সৃষ্টি হয়েছে একধরনের অনিশ্চয়তা।

ইরানের রাজনৈতিক কাঠামো অনুযায়ী, খামেনির বক্তব্যই দেশটির সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রেসিডেন্ট বা অন্য যেকোনো পদস্থ কর্মকর্তা কোনো নীতিগত বা কৌশলগত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেও তা কার্যকর হয় না যদি না খামেনি তাতে সম্মতি দেন। ফলে যুদ্ধবিরতির প্রশ্নে তার নীরবতা দেশটির অভ্যন্তরে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বিভিন্ন গোপন সূত্রের বরাতে মিডিয়ায় জানা গেছে, তিনি বর্তমানে তেহরানে নিজের নিয়মিত বাসভবনে নন। ধারণা করা হচ্ছে, নিরাপত্তার কারণেই তাকে রাজধানীর বাইরে কোনো এক বিশেষ বাংকারে স্থানান্তর করা হয়েছে। যদিও ইরান সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি।

এই গোপন অবস্থান এবং অনুপস্থিতি ইঙ্গিত দিতে পারে যে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসলেও দেশের ভেতরে এখনো চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য। আবার এটাও হতে পারে যে খামেনি নিজেই এখনো মনস্থির করতে পারেননি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেবেন কিনা।

১৮ই জুন খামেনির একটি রেকর্ড করা ভিডিও বার্তা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত হয়, যেখানে তিনি আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ আহ্বান সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। তবে সেটিও ছিল পুরোনো রেকর্ড। এরপরে তিনি সরাসরি আর কোনো বক্তব্য রাখেননি।

বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খামেনির নীরবতা এই যুদ্ধবিরতিকে দীর্ঘমেয়াদে টিকিয়ে রাখার পথে বড় বাধা হতে পারে। ইরানে রাজনৈতিক প্রভাবশালী শক্তিগুলো তার ইঙ্গিত ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যদি তিনি যুদ্ধবিরতির স্বীকৃতি না দেন, তবে আবারও সংঘাত শুরু হতে পারে।

বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, খামেনি যুদ্ধবিরতির পক্ষে কথা না বললে আন্তর্জাতিক সমর্থনেও ভাটা পড়বে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে তৎপরতা চলছে তাতে ইরানের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে ইরানের রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন: আয়াতুল্লাহ খামেনি কি যুদ্ধবিরতিকে সম্মতি দেবেন, নাকি তার নীরবতার মধ্যেই লুকিয়ে আছে নতুন কোনো কঠোর বার্তা?

সবকিছু মিলিয়ে, এখন পুরো দুনিয়ার দৃষ্টি ইরানের রাজধানী তেহরানের দিকে—আরো নির্দিষ্ট করে বলা যায়, আয়াতুল্লাহ খামেনির সম্ভাব্য পরবর্তী ঘোষণার দিকে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली