যশোর সদর উপজেলার ১৪নং নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের অফিস সহকারী কর্তৃক দুস্থদের বরাদ্দকৃত ভিজিএফ'র চাল বিক্রির সময় প্রশাসকের হাতে ধরা পড়েন। তবে ক্ষমা এযাত্রায় রক্ষা পায় অফিস সহকারী আলমগীর কবির। বিক্রি করে দেয়া ভিজিএফ'র চালের স্লিপ উদ্ধার করে ফের এলাকার দুস্থদের মাঝে বিতরণ করে দেন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক প্রকাশ চন্দ্র। জানাযায়, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সদর উপজেলার ১৪নং নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১'হাজার ৯'শত ২৩'জন দুস্থ নাগরিকের জন্য মোট ১৯ মেট্রিক টন সরকারি চাল বরাদ্দ আসে। গত মঙ্গলবার দুপুরে বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল গুলো যথাযথ নিয়মে একটি স্লিপের বিপরীতে ১০ কেজি পরিমানে দুস্থ জনগনের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছিলো। বিতরণের সময় প্রশাসক প্রকাশ চন্দ্র'র অফিস সহকারী ও গ্রামপুলিশ আজিজুরের কর্মকান্ডে সন্দেহের সৃষ্টিতে জিঙ্গাবাদের এক পর্যায়ে দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত চালের স্লিপ ৫নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ আজিজুরের কাছে বিক্রির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এঘটনার জানাজানি হলে জনসাধারনের মাঝে তিব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং চাল নিতে আসা সাধারণের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এব্যাপারে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের নিয়োজিত প্রশাসক, প্রকাশ চন্দ্র সরকার বলেন- অফিস সহকারী আলমগীর কবির বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বারগণের কাছ থেকে চালের স্লিপ নিজে বিলি করার কথা বলে সংরহ করেছে বলে জেনেছি। কিন্তু সেই স্লিপ গুলো দুস্থদের মাঝে বিতরণ না করে গ্রাম পুলিশের কাছে বিক্রি করার বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি জানার সাথে-সাথে তাদের থেকে স্লিপ গুলো উদ্ধার করে ফের এলাকার দুস্থদের মাঝে বিতরণ করে দিয়েছি। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন ঈদের পর ছুটি শেষে অফিসিয়ালি মিটিং করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন কার্যসহকারী আলমগীর কবির অত্র দপ্তরের বৈধ নিয়োগকৃত কেউ নন। ভিজিএফ চালের স্লিপ বিক্রির ব্যাপারে ইউপি সচিব মোর্শেদ আলম বলেন- ঈদ উপলক্ষে ১৯ মেট্রিক টন চাল ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১৯২৩ জন দুস্থের মাঝে সরকারি বরাদ্দ এসেছে। যা সুষ্ঠু ভাবে বিতরণ করা হয়েছে। তবে অফিস সসহকারী আলমগীর ভিজিএফ'র স্লিপ নিয়ে টাকায় বিক্রির কথা জেনেছি। প্রশাসক মহদ্বয় স্লিপ গুলো উদ্ধার করে ফের দুস্থদের মাঝে বিতরণ করে দেন। তবে গরিবদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল ক্রয়-বিক্রয় করা অপরাধ। এনিয়ে ঈদ পরবর্তি ছুটি শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। অত্র ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা বলেন তাদেরকে নির্বাচনী এলাকার দুস্থজনদের বিতরণের জন্য দেয়া স্লিপ আলমগীর মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের থেকে নিয়েছে। কিন্তু সেই স্লিপ বিতরণ না করে নিজেই হস্তগত করে বিক্রি করে অন্যায় করেছে। তাকে পরিষদ থেকে দ্রুত অপসারণ করা হোক। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলমগীর কবির ইতোপূর্বে বাম রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলেন। পরে বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পদ সহ ইউনিয়ন পরিষদে অফিস সহকারী পদ বাগিয়ে নেন। ইতোপূর্বে দুর্নীতির কারনে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। ৫ আগষ্টের পর পট পরিবর্তন হলে রাতারাতি ভোলপাল্টে নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে স্বপদে ফের অবস্থান নেন। তার ব্যাপারে জানতে চাইলে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম বিশ্বাস জানান- আলম ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক পদে রয়েছে। তার এই কর্মকান্ডের দায় দল কোনো ভাবে নেবে না। ঘটনার সত্যতা প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
যশোরের নরেন্দ্রপুর পরিষদের অফিস সহকারী কর্তৃক দুস্থদের বরাদ্দকৃত চাল বিক্রির সময় প্রশাসকের কাছে ধরা; ক্ষমা চেয়ে রক্ষা।..


Geen reacties gevonden