যশোরে প্রাইভেট কারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা, নি হ ত ২..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লেগে নারী চালকসহ দুইজন নিহত, আহত দুই ব্যবসায়ী ঢাকায় পাঠানো হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।..

যশোরের নতুনহাট এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে ঘটে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা। যশোর থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর যাচ্ছিলেন চারজন ব্যবসায়ী এক প্রাইভেট কারে। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন জুঁই খাতুন নামে এক নারী। পথে হঠাৎ গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে গাড়ির সামনের আসনে থাকা চালক জুঁই খাতুন (৩০) ও যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন (৪০) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন গাড়ির অন্য দুই যাত্রী, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী বেতাগা গ্রামের মামুন (৩২) ও যশোর সদর উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের মাসুদ (৪৫)। তাঁরা উভয়েই ব্যবসার কাজে ছিলেন। আহতদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নতুনহাট এলাকায় পৌঁছার সময় জুঁই খাতুনের চালানো গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনায় গাড়িটি প্রায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়। আহতদের সঙ্গে থাকা অন্যান্য যাত্রীরা স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হাইওয়ে পুলিশের যশোর নাভারণ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, নিহত ও আহত ব্যক্তিরা বেনাপোল স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। ব্যবসার কাজের জন্য তারা বেনাপোলে যাচ্ছিলেন। ঘটনার পর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অন্যদিকে, চালক জুঁই খাতুনের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই বলে জানায় পুলিশ। তবে তাঁর স্বামী জানিয়েছে, তিনি গাড়ি চালাতে পারতেন।

এই দুর্ঘটনা আবারও একবার মনে করিয়ে দিলো সড়ক নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার কথা। দ্রুত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা ও যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবার ও ব্যবসায়িক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কটি দেশের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর রুট। এই মহাসড়কে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে প্রাইভেট কার চালনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা অবলম্বন না করলে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এ ঘটনায় চালকের লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, যা সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত।

সরকারি ও স্থানীয় প্রশাসনকে কড়া আইন প্রয়োগ, সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জরুরি সড়ক সংস্কার ও সিগন্যাল ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। ব্যবসায়িক কাজে যাতায়াতকারী ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ পরিবহন নিশ্চিত করাও সময়োপযোগী।

এই দুর্ঘটনার মর্মান্তিকতা মনে করিয়ে দেয়, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। চালকদের লাইসেন্স থাকা, ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং সড়ক ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।

দুর্ঘটনায় নিহত যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন ও জুঁই খাতুনের পরিবার গভীর শোকের মুগ্ধ। স্থানীয় ও ব্যবসায়িক মহল তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হচ্ছে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা সকলেই ছিলেন পরিশ্রমী ও সতর্ক মানুষ। এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা তাদের জীবনে বড় ক্ষতি নিয়ে এসেছে। তারা সরকারের কাছে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা চেয়েছেন।

এই দুর্ঘটনার ঘটনা সড়ক নিরাপত্তার গুরুত্ব ও সচেতনতা বাড়ানোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় নজির হয়ে থাকবে।
যশোর-বেনাপোল রুটে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দুর্ঘটনা এড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

No comments found