ভারতের ভেতর থেকে এবার পাকিস্তানকে এক নতুন ধাক্কা! সীমান্তে রক্তের দাম এবার শোধ হচ্ছে পান দিয়ে। রাজস্থানের ভরতপুর জেলার কৃষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে ঘোষণা করেছেন—আর এক ছটাক পানও পাকিস্তানে রপ্তানি হবে না।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও অঞ্চলে একটি ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান এক পর্যটক। এই ঘটনা গোটা ভারতকে নাড়িয়ে দেয়। সেনাবাহিনী তৎপর হয় এবং দ্রুত গতিতে পাল্টা হামলা শুরু করে। সেনা সূত্রে জানা গেছে, ৭ মে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। একাধিক বিমানঘাঁটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। পাশাপাশি, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সিন্ধু জল চুক্তিও অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে, যার ফলে পাকিস্তানে তৈরি হয়েছে তীব্র জলসংকট।
এই পরিস্থিতিতে, রাজস্থানের ভরতপুর ও বায়ানা মহকুমার কৃষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে একটি দেশপ্রেমে ভরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়া দেশের সঙ্গে তারা আর কোনো ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখবেন না। বিশেষ করে তাঁদের অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য, ‘ভরতপুর পান’ আর পাকিস্তানে যাবে না।
ভরতপুরের পান শুধু ভারতের মধ্যেই নয়, পাকিস্তানেও ব্যাপক জনপ্রিয়। এই পান সেখানকার বাজারে একটি চাহিদাসম্পন্ন পণ্য হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এবার কৃষকরা দেশের স্বার্থকে ব্যবসার ওপরে স্থান দিয়েছেন।
একাধিক গ্রামে সভা করে সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য—যে দেশে আমাদের সেনা এবং নিরীহ নাগরিকদের ওপর আক্রমণ হয়, সেই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা উচিত নয়। শুধু লাভের জন্য দেশের আত্মসম্মানকে জলাঞ্জলি দেওয়া যাবে না।
এই সিদ্ধান্তে এখন গোটা দেশ থেকে প্রশংসার জোয়ার বইছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে সাধারণ মানুষ—সবাই বলছেন, এটি কেবল একটি বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি এক ধরনের নীরব প্রতিবাদ, দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ।
একজন কৃষক নেতা জানান, “পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসবাদ দমন না করে, তাহলে আমরা আমাদের রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখব। আমাদের পান আমাদের গর্ব, কিন্তু দেশের গর্ব তার থেকেও বড়।”
এই পদক্ষেপ এখন কেবল একটি কৃষক সম্প্রদায়ের প্রতিবাদ নয়—এটি হয়ে উঠেছে জাতীয় প্রতিরোধের প্রতীক। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্তে স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে জনগণ আজ একজোট।
পাকিস্তানের পক্ষে এই রকম একটি কৃষিপণ্য রপ্তানি বন্ধ হওয়া মানে শুধুই অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং ভারতের সাধারণ জনগণের ঐক্য এবং প্রতিবাদের শক্তি সম্পর্কে একটি কড়া বার্তা।
উল্লেখযোগ্য, এর আগেও কেন্দ্র সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জল চুক্তি স্থগিত রেখে বড় কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন তার সঙ্গে কৃষকদের এই শক্তিশালী সিদ্ধান্ত পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক পরিসরেও চাপে ফেলছে।
শেষ কথা—সন্ত্রাসে মদত দিলে কেবল সীমান্তে জবাব নয়, দেশের প্রতিটি মাটি থেকে উঠবে প্রতিবাদ। ভরতপুরের পান সেই প্রতিবাদেরই এক প্রতীক হয়ে উঠেছে।