close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলো সরকার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অনশন, সমাবেশ আর দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে জয় পেল জবি শিক্ষার্থীরা। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনশন ভাঙালেন ইউজিসি চেয়ারম্যান। বিস্তারিত জানতে পড়ুন পুরো রিপোর্ট।..

আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ জবি শিক্ষার্থীদের সামনে নতি স্বীকার করল সরকার

দীর্ঘদিনের আন্দোলন, অনশন ও দাবির মুখে অবশেষে সরকারের পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের পক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ সরাসরি আন্দোলনস্থলে এসে জানিয়েছেন—সরকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে। এ ঘোষণার পর তিনি পানি পান করিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।

শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু কাকরাইল মোড়ে উপস্থিত হয়ে তিনি এই তথ্য জানান। তার বক্তব্য অনুযায়ী, সরকার শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ইতোমধ্যেই সেগুলো পূরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, “ছাত্রদের দাবির প্রতি সরকার শ্রদ্ধাশীল। তাই বাজেট বৃদ্ধি, আবাসনের ব্যবস্থা ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ—সবকিছুতেই ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, রাত ৮টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করবে এবং বিস্তারিত পরিকল্পনা জানানো হবে।

এর আগে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন বাজেট বৃদ্ধি, আবাসন সমস্যার দ্রুত সমাধানে অস্থায়ী হল নির্মাণ, এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভাষ্যে জানা যায়, এসব দাবির বিষয়ে তারা বহুদিন ধরে আওয়াজ তুললেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাধ্য হয়েই এবার অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে কাকরাইল মোড়ে শুরু হয় গণঅনশন। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে এসে রাস্তায় বসে পড়েন। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত কেউ খাবার না খাওয়ার ঘোষণা দেন।

সমাবেশ ও আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৩টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব লিমন 'জবি ঐক্য'র পক্ষ থেকে গণঅনশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

আন্দোলনস্থলে উপস্থিত থাকা একজন শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পেরিয়ে যাচ্ছি। অথচ ন্যূনতম আবাসনের সুযোগ, ভালো পরিবেশ, বাজেটসহ প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমাদের কষ্ট দেখে যদি কেউ না বোঝে, তাহলে আমরা নিজেরা লড়ব।”

দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীদের এই ঐক্য, নিষ্ঠা ও সাহসিকতার প্রশংসা করছেন নানা মহল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক জনসমর্থন পায়।

এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি করল। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি মেলায় শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে এখন স্বস্তি ও আনন্দের ঝিলিক।

তবে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট করেছেন—দাবিগুলো বাস্তবে কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা পুরো প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। তারা চান, এ প্রতিশ্রুতি যেন কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলন শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প নয়; এটি দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সরকারের দায়িত্ববোধ এবং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের এক বাস্তব উদাহরণ হয়ে থাকবে।

No comments found