মার্কিন রাজনীতিতে চমকপ্রদ মোড়! যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ করেই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে "ভালো মানুষ" বলে আখ্যায়িত করলেন। শুধু তাই নয়, আসন্ন ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকেই তাদের বৈঠক হতে যাচ্ছে — যা বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত কিছুদিন ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ওয়াশিংটনের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছিল। তবে ট্রাম্পের এই সাম্প্রতিক মন্তব্য এবং বৈঠকের ঘোষণায় বোঝা যাচ্ছে, তিনি হয়তো আগের অবস্থান থেকে কিছুটা নরম হচ্ছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জানান, “আমরা স্বাভাবিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। উনার (জেলেনস্কির) সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব।” এর মধ্য দিয়ে দুই নেতার বৈঠকে যুদ্ধ এবং ইউক্রেনের জটিল কূটনৈতিক সংকট প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ মন্তব্য একদিকে যেমন ট্রাম্পের কূটনৈতিক অবস্থান পাল্টানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেমনি ইউক্রেনের জন্যও এটি হতে পারে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার।
ট্রাম্প আরও বলেন, "জেলেনস্কিকে আমি সম্মান করি। আমাদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল, কিন্তু এখন তা নেই।"
এই স্বীকারোক্তি অনেককেই অবাক করেছে কারণ অতীতে একাধিকবার জেলেনস্কির কড়া সমালোচনায় মুখর ছিলেন ট্রাম্প। এমনকি ফেব্রুয়ারির এক বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডাও হয়।
সে সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, “আপনার হাতে আর কোনো বিকল্প নেই। সেনারা মারা পড়ছে, ইউক্রেন হারছে।” জেলেনস্কি এর তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। বৈঠকটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
এর আগে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক নির্ধারিত থাকলেও ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে হোয়াইট হাউসে ফিরতে হয় ট্রাম্পকে, ফলে সেই বৈঠক বাতিল হয়। কিন্তু এবার ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে এই সম্ভাব্য বৈঠক ঘিরে নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেখানে মার্কিন অবস্থানের পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, বাইডেন প্রশাসনের বিপরীতে ট্রাম্পের কৌশল কী হবে, সেটাই নজর কাড়ছে।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে কয়েক শ কোটি ডলারের সামরিক ও অর্থসহায়তা দিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সমর্থনের মাত্রা হ্রাস পায়। বরং ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন, "এই যুদ্ধ অনর্থক, জেলেনস্কির কৌশল ব্যর্থ।"
তবে এখন হঠাৎ করে "ভালো মানুষ" বলার পেছনে হয়তো কূটনৈতিক কৌশল কাজ করছে — হয়তো ট্রাম্প চাইছেন সম্পর্ক মেরামত করে যুদ্ধের ‘কার্যকর সমাধান’ খুঁজে বের করতে।
আশা করা হচ্ছে, ন্যাটো সম্মেলনের প্রান্তিক আলোচনায় উঠে আসবে—
-
ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে প্রস্তাব
-
সামরিক সহায়তার নতুন রূপরেখা
-
রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা প্রশমনের উপায়
-
ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমন্বয়ের রূপরেখা
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির এই বৈঠক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নতুন দিক নির্ধারণ করতে পারে।
ট্রাম্পের মুখে প্রশংসা শুনে অবাক অনেকেই। কিন্তু এটা নিছক সৌজন্য, না কি বড় কোনো কূটনৈতিক টার্নিং পয়েন্ট — তা সময়ই বলে দেবে।