জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান আর নেই। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকার পুরান ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর রাত বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাজা, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং ডাকসুর শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য সহপাঠী ও শুভানুধ্যায়ী।
জানাজায় অংশ নিতে আসেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য আমানুল্লাহ আমানসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম এবং জবি ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দও। ডাকসু থেকেও সহ-সভাপতি আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) এবং সহকারী সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান জানাজায় অংশ নেন।
হাসিবুর রহমানের সহপাঠী ড্যানি বলেন, “পবিত্র জুমার দিনে আমার বন্ধু হাসিব আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আমরা আল্লাহর কাছে তার জন্য জান্নাত ও ক্ষমা কামনা করছি।” ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আমানুল্লাহ আমান তার বক্তব্যে বলেন, “জীবন ও মৃত্যুর জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। হাসিবের জন্য আমরা সবাই দোয়া করব।”
ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম হাসিবুর রহমানের জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, “তিনি ছিলেন আন্দোলনের এক নিবেদিত প্রাণ সৈনিক। তার অবদান আমরা কখনও ভুলব না।” শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলামও জানান, “হাসিব জুলাই আন্দোলনের অগ্রদূতদের একজন ছিলেন। তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।”
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “হাসিব আমাদের পরিবারের এক অত্যন্ত প্রিয় সদস্য ছিলেন। তার অকাল প্রয়াণে আমরা গভীরভাবে ব্যথিত।” দলটির আরেক সিনিয়র নেতা নাজিমুদ্দিন আলম ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে বলেন, “হাসিব ছিল সহমর্মী ও কর্মঠ একজন সংগঠক। তার পরিবারের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরও শোক প্রকাশ করে বলেন, “আজ আমরা জবির পরিবার থেকে এক মর্যাদাবান সদস্যকে হারিয়েছি। ক্যাম্পাসে যে ঐক্যবদ্ধ পরিবেশ তিনি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিলেন, সেই পরিবেশের একজন সক্রিয় সদস্য আজ আর নেই।” প্রক্টর কর্তৃপক্ষ আরও জানান, প্রয়োজনে নিহতের পরিবারের আর্থিক বিষয়গুলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজের দায়িত্বে নেবে।
হাসিবুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (বারোতম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর জন্মস্থান ভোলা। তরুণ এই ছাত্রনেতার অকাল মৃত্যুতে ক্যাম্পাসজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহপাঠী, শিক্ষক ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং তার স্বপ্ন ও আদর্শকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।



















