close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই, ফাওজুল কবির

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের উত্তেজনার মধ্যেও বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে না বলে জানালেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। ঘাটতি মোকাবিলায় নেওয়া হচ্ছে কৌশলগত প্রস্তুতি।..

বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে থাকা ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মাঝেও বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান।

মঙ্গলবার ঢাকার বিদ্যুৎ ভবনে লাফার্জহোলসিম ও জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানির মধ্যে ১০ বছরের গ্যাস সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন,যুদ্ধের মাঝেও আমরা একটি তেলের জাহাজ পেয়েছি। দেশে পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। তেলের মূল উৎস মধ্যপ্রাচ্য হলেও সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মার্কেট থেকেও আমাদের সরবরাহকারীরা তেল আনেন। ফলে কোনো সংকটের সম্ভাবনা নেই। আমরা পরিস্থিতি নজরে রাখছি।

এই চুক্তির আওতায় আগামী ১৮ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে জালালাবাদ গ্যাস প্রতিদিন ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করবে লাফার্জহোলসিমকে। বিইআরসি নির্ধারিত নতুন দর অনুযায়ী শিল্প খাতে ৪০ টাকা ও ক্যাপটিভ খাতে ৪২ টাকা প্রতি ঘনমিটার হারে চুক্তি করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো লাফার্জের সঙ্গে ২০ বছরের একটি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি হয়েছিল। এবার তা নবায়ন করে নতুন মেয়াদে চুক্তি হলো।

তেলের দাম না বাড়িয়ে ঘাটতি কীভাবে পূরণ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান—আমাদের হাতে কিছু কৌশল আছে। বিপিসির হাতে কিছু অর্থ মজুদ রয়েছে। প্রয়োজন হলে সেখান থেকেই সমন্বয় করা হবে। তবে নতুন করে ভর্তুকি বাড়ানো সম্ভব নয়। গ্যাস খাতে আগেই বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।

চুক্তি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন—লাফার্জহোলসিমের অবস্থান সিলেট অঞ্চলে, যেখানে গ্যাসের ঘাটতি নেই। অন্য কোম্পানিগুলো মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক, সেখানে সরবরাহে সমস্যা রয়েছে। এ কারণেই এই চুক্তি সময়োপযোগী।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি সচিব সাইফুল ইসলাম।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন—

  • সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো সিজফ্রিয়েড রেঙ্গলি

  • ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার

  • স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল মারিয়া সিস্তিয়াগা ওচোয়া

  • পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রেজানুর রহমান

  • জালালাবাদ গ্যাসের এমডি (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ এর সিইও ইকবাল চৌধুরী বলেন,এই চুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি বার্তা যাবে— বাংলাদেশ বিনিয়োগবান্ধব। পুরাতন বিনিয়োগ ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগেও আমরা মনোযোগী।

নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন,আমরা কেবল নতুন নয়, পুরনো বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখার দিকেও নজর দিচ্ছি। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ফিডব্যাক ভালো পাওয়া যাবে বলে মনে করি।

হোলসিম (সুইজারল্যান্ড) ও লাফার্জ (ফ্রান্স) ভিত্তিক দুটি বৃহৎ সিমেন্ট কোম্পানি ২০১৪ সালে একীভূত হয়ে হয় লাফার্জহোলসিম। বর্তমানে এটি বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বাংলাদেশে এই কোম্পানির প্রধান কারখানা রয়েছে সিলেটের ছাতকে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে দুটি এবং খুলনার মোংলায় একটি গ্রাইন্ডিং স্টেশন চালু রয়েছে।

বিশ্বের যেকোনো প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশ এখন দৃঢ় অবস্থানে। যুদ্ধ বা সংকট মোকাবিলায় সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি ও কৌশলই বড় ভরসা। এই ধরণের দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি বাংলাদেশে শিল্পখাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator