close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

জাতীয় ঐকমত্যে অনৈক্যের ইঙ্গিত: আলোচনার অমিল জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে : আলী রীয়াজ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চললেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনো অমিল রয়ে গেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, এই ভিন্নমতগুলোর বিস্তারিত তথ্য..

জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রসর হলেও কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একমত হতে না পারার কথা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। রবিবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ও সুশীল সমাজের মধ্যকার এক আলোচনাসভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের প্রথম ধাপের আলোচনায় অনেক বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে আমরা এখনো একমত হতে পারিনি, আর সেই বিষয়গুলো আমরা জনসম্মুখে প্রকাশ করবো।”

কমিশনের চলমান কার্যক্রমের পরিধি ব্যাখ্যা করে আলী রীয়াজ জানান, গত ছয় মাসে তারা মোট ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এই আলোচনা প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উঠে এসেছে, যার কিছুতে পারস্পরিক সম্মতি তৈরি হলেও কিছুতে মতভেদ রয়ে গেছে। “আমরা মনে করি, জাতীয় ঐকমত্য গঠনের এই উদ্যোগ আমাদের সময়ের দাবি। মানুষের রক্ত-ঘাম ও ত্যাগের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই কাজ করে যাচ্ছি,” বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “এই দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাব রয়েছে। কিন্তু এখন যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তা সংস্কারের অসীম সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। এ সুযোগ যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে জাতি আবারও হতাশায় নিমজ্জিত হবে।”

আলী রীয়াজ আরও স্পষ্ট করে বলেন, ঐকমত্য গঠনের ক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করলেই হবে না। এজন্য নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। “সুশীল সমাজ, পেশাজীবী, শিক্ষাবিদ, মিডিয়া — সবাইকে একত্রিত না করলে এই সংস্কার উদ্যোগ অর্থহীন হয়ে পড়বে,” যোগ করেন তিনি।

এই সভার এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা ছিল যে, কমিশন দ্বিতীয় পর্যায়ে আলোচনা শুরু করবে এবং সেখানে এখনো যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য তৈরি হয়নি, তা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করা হবে। এই আলোচনাগুলো হবে স্বচ্ছ ও জনসমক্ষে, যাতে দেশের মানুষ পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে।

কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে এমন এক প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন ছিল বহুদিন ধরে। তবে এই প্ল্যাটফর্ম কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করবে কমিশনের স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ এবং সকল পক্ষের অংশগ্রহণের উপর।

সভায় উপস্থিত সুশীল সমাজের সদস্যরাও বলেন, প্রকৃত ঐকমত্য তখনই সম্ভব, যখন রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই উদ্যোগ নতুন আলো দেখালেও মতবিরোধের স্পষ্ট বার্তা জাতির সামনে তুলে ধরেছে। আলী রীয়াজের বক্তব্যে প্রতীয়মান হয়েছে যে, সবকিছুর উপরে প্রাধান্য পাচ্ছে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের অংশগ্রহণ। এখন সময় বলবে, এই ঐকমত্য আদৌ বাস্তবায়নের পথে কতদূর এগোতে পারে।

Keine Kommentare gefunden