close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

জাতীয় দলে খেলার আশা না থাকলে ক্রিকেট খেলবেন না নুরুল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় দলে সুযোগ না পেলে ক্রিকেটই ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন নুরুল হাসান। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত ফর্মেও নির্বাচকদের উপেক্ষায় ক্ষোভ ঝরালেন জাতীয় দলের সাবেক উইকেটরক্ষক।..

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম বিদায় নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। দুই অভিজ্ঞ তারকার শূন্যতা পূরণের জন্য এখন দরকার নতুন মুখ। মিডল অর্ডারে এই শূন্যতা পূরণে যে কয়েকজন ক্রিকেটারের নাম ঘরোয়া পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আলোচনায় ছিল, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নুরুল হাসান সোহান। কিন্তু বিস্ময়করভাবে তাকে বিবেচনাই করা হয়নি সদ্য ঘোষিত ওয়ানডে স্কোয়াডে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন সিরিজের ১৬ সদস্যের দলে জায়গা হয়নি তার।

এরপরই ভেঙে পড়েছেন নুরুল। খোলামেলা এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন শেষ হলে আর ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়ার মানে নেই তাঁর কাছে। দীর্ঘদিন ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে থাকা সত্ত্বেও একাধিকবার উপেক্ষিত হওয়ায় তিনি আক্ষেপ ঝরিয়েছেন অকপটে।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নুরুল। ১১ ম্যাচে ৫৮ গড় এবং ৯৩.৫৫ স্ট্রাইক রেটে ৫১২ রান করেছেন তিনি। এই পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন তিনি এখনও কতটা ফিট এবং প্রতিযোগিতামূলক। এর আগের মৌসুমেও ছিল ৪৯৫ রান। এত ধারাবাহিক পারফরম্যান্স থাকা সত্ত্বেও তার জাতীয় দলে ডাক না পাওয়াটা অনেকের কাছেই অবাক করা ব্যাপার।

এই ধারাবাহিকতা তাঁকে ‘এ’ দলে জায়গা করে দিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে এক ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং চার দিনের ম্যাচেও একটি সেঞ্চুরি পান তিনি। এমনকি ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ার দিনেও প্রস্তুতি ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিং করে ৭০ বলে ৭ চার ও ৭ ছক্কায় ৯৭ রান করেন তিনি।

চট্টগ্রামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নুরুল বলেন,
“কয়েক বছর ধরেই ৫০ ওভারের ম্যাচগুলো ভালো যাচ্ছে। ঘরোয়া ক্রিকেটের মৌসুমগুলোও ভালো যাচ্ছে। শেষ যখন ওয়ানডে খেলেছি, হয়তো ভালো করেছিলাম। যদি নিয়মিত হতে পারতাম, তাহলে হয়তো ক্যারিয়ারটা অন্য রকম একটা জায়গায় থাকত।”

তাঁর কণ্ঠে ঝরল দীর্ঘদিনের জমে থাকা হতাশা ও ক্ষোভ। বললেন,অবশ্যই আক্ষেপ ওই জায়গায় আছে। ওই সুযোগটা হয়তো নিতে পারি নাই যেকোনো কারণে। আক্ষেপ থাকবে। যেহেতু জাতীয় দলে খেলা একটা গর্বের ব্যাপার, যখন জাতীয় দলে খেলার ওই স্বপ্ন বা আশাটুকু থাকবে না, তখন আর ক্রিকেট খেলব না।

এমন মন্তব্যে বোঝাই যায়, কতটা অভিমান আর কষ্ট নিয়ে দিন পার করছেন এই ক্রিকেটার। ঘরোয়া লিগে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স, ‘এ’ দলে দাপট, সবই যেন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে নির্বাচকদের কাছে।

উল্লেখ্য, লিটন দাস স্কোয়াডে ফিরেছেন, আছেন জাকের আলীও। নির্বাচকেরা তাই আর একজন অতিরিক্ত উইকেটরক্ষক হিসেবে নুরুলকে চাননি। যদিও প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন জানিয়েছেন, নুরুল এখনও নির্বাচকদের বিবেচনায় রয়েছেন এবং সামনে কোনো সিরিজে তার সুযোগ মিলতে পারে।

নুরুলের সামনে এখন বড় সুযোগ গ্লোবাল সুপার লিগ। আগামী ১০ জুলাই গায়ানায় শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলবেন তিনি। গত মৌসুমে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তার নেতৃত্বে। তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে জিএসএলের প্রস্তুতি শুরু করতে পারেননি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নুরুলের মতো অভিজ্ঞ এবং নিবেদিত ক্রিকেটারের এভাবে বারবার অবহেলিত হওয়া কেবল তাঁর জন্য নয়, বরং দেশের ক্রিকেটের জন্যও হতাশাজনক। তিনি শুধু ফর্মে নন, একজন দারুণ দলনায়কও। নির্বাচকদের উচিত হবে নুরুলের মতো ক্রিকেটারদের প্রতি সুবিচার করা এবং যারা দেশের ক্রিকেটের জন্য নিবেদিত, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা।

No comments found