জাপানে পা রাখলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস—আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও উন্নয়ন সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানে পৌঁছেছেন। সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, টোকিওতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নিক্কেই সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং জাপানের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উন্নয়নমূলক আলোচনা।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে টোকিওর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন তিনি। পথে হংকংয়ে একবার যাত্রাবিরতি করেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন তার নির্ধারিত সফরসঙ্গীরা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, অধ্যাপক ইউনূস মূলত অংশগ্রহণ করবেন নিক্কেই ফোরামের বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ফিউচার অব এশিয়া’-তে। এই সম্মেলনটি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা ও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তিনি বলেন, “এ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ড. ইউনূস বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান, আর্থ-সামাজিক সংকট ও উত্তরণের সম্ভাব্য রূপরেখা উপস্থাপন করবেন। একই সঙ্গে, তিনি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও শক্তিশালী করতে কাজ করবেন।”
সফরসূচি অনুযায়ী, ড. ইউনূস জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা, প্রযুক্তি স্থানান্তর, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এছাড়া সফরকালে তিনি জাপানের সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, দাতা প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে উন্নয়ন সহযোগিতা, বিনিয়োগ সম্ভাবনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সফর শুধু আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় ভিজিট নয়; বরং এটি হতে পারে ভবিষ্যতের কৌশলগত সম্পর্ক গঠনের অন্যতম মাইলফলক। কারণ জাপান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার, এবং ড. ইউনূসের মতো একজন বৈশ্বিক ভাবমূর্তির নেতার সফর সেই সম্পর্ককে আরও গভীরতর করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস সফর শেষে আগামী ৩১ মে দেশে ফিরবেন বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তার এই সফর ঘিরে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও উন্নয়ন অঙ্গনে ব্যাপক আগ্রহ এবং আশাবাদ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।