close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

জামালগঞ্জে কমেছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা

Abdus Samad avatar   
Abdus Samad
জামালগঞ্জে কমেছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা
আব্দুস সামাদ আফিন্দী, বিশেষ  প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত উপজেলা জামালগঞ্জের একমাত্র সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামালগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
 
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় কলেজটি থেকে মোট ৬৬৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে মানবিক বিভাগে ৫৯৬ জন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২৮ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগে ৪৪ জন রয়েছে।
 
অন্যদিকে, ২০২৪ সালে এইচএসসিতে মোট ৮২০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। তখন ৭১৬ জন মানবিক, ৪৭ জন ব্যবসায় শিক্ষা ও ৫৭ জন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর ১৫২ জন শিক্ষার্থী কমে গেছে, যা প্রায় ১৮.৫৪% হ্রাস নির্দেশ করে।
 
চলতি বছর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে জামালগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এবং জামালগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে।
 
 শিক্ষার্থী  উজ্জল হোসেন (মানবিক বিভাগ) বলেন,
“কলেজে একসময় অনেক শিক্ষার্থী ছিল, এখন অনেক ফাঁকা লাগে। নতুন বই, প্রযুক্তিগত সুবিধা, এবং শিক্ষকের উপস্থিতি বাড়লে আগ্রহও বাড়বে।”
 
একজন অভিভাবক, মোছা. হালিমা খাতুন বলেন,
“বছর বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে থাকলে ভবিষ্যতে কলেজের অবস্থা আরও খারাপ হবে। সরকার ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ দরকার।”
 
মানবাধিকার কর্মী নুরুল হক জানান,
একটি উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়া শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের সংকট নয়—এটি গোটা অঞ্চলের শিক্ষার প্রতি মানসিকতার প্রতিফলন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন।
 
কলেজের প্রভাষক মুজিবুর রহমান  বলেন,“অনেক সময় পরিবারিক সমস্যা, আর্থিক অস্বচ্ছলতা কিংবা সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়েরা পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। স্থানীয়ভাবে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে পারলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব।”
 
জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,
“একটি উপজেলার প্রধান সরকারি কলেজে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়া অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। এটি শুধু শিক্ষা নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবের প্রতিফলন। প্রয়োজন শিক্ষকদের স্বতঃস্ফূর্ততা, সরকারের নজরদারি এবং অভিভাবকদের সচেতনতা। স্থানীয়ভাবে একসাথে কাজ করলেই এই পরিস্থিতি মোকাবিলা সম্ভব।”
 
 
এবিষয়ে জামালগঞ্জ সরকারি কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ সুজিত রঞ্জন দে বলেন,
“পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে, তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। শিক্ষার মান ও পরিবেশ উন্নয়নে শিক্ষক-কর্মচারী সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। অর্থনৈতিক সংকট, পারিবারিক কাজে ব্যস্ত,জীবিকার তাগিদে অনেক শিক্ষার্থী প্রবাসে পাড়ি জমাচ্ছে   যার ফলে পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিভাবক সমাবেশ ও শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। আমরা ভবিষ্যতে ভর্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ নিচ্ছি।”


 
Nema komentara