এক সময় মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। ১২ বছর ৮ মাস কারাগারে কাটানোর পর রাজনীতির উত্তাল ঢেউ বদলে দেয় তার ভাগ্য। ২৮ মে মুক্তি পাওয়ার পরই দলীয় কার্যালয়ে তার সরব উপস্থিতি, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক—সবই ইঙ্গিত দিচ্ছে নতুন কোনো বড় পদে তার প্রত্যাবর্তনের।
সূত্র বলছে, জামায়াতের বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখনো আমির হওয়ার সুযোগ নেই, তবে ‘নায়েবে আমির’ পদে তার দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। বর্তমানে তিনজন নায়েবে আমির থাকলেও সংখ্যার নির্ধারণ না থাকায় নতুন করে আজহারুল ইসলামকে সেই পদে যুক্ত করার চিন্তা চলছে।
একইসঙ্গে আলোচনা চলছে, তিনি রংপুর-২ আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন। যদিও দল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে গত সোমবারের শূরা বৈঠকে তার উপস্থিতি এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য থেকে এমনটাই ইঙ্গিত মেলে।
জানা গেছে, কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি বিশ্রামে আছেন। তবে দলীয় বৈঠক ও রাজনৈতিক পরিকল্পনায় যুক্ত হচ্ছেন ধীরে ধীরে। তাঁর সন্তানরা বিদেশে অবস্থান করায় আপাতত তিনি বাংলাদেশে সময় কাটাচ্ছেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে ধীরে ধীরে সক্রিয় হচ্ছেন।
জামায়াতের একজন প্রচার সদস্য জানান, ‘তিনি আপাতত বিশ্রামে থাকলেও ঈদের পর থেকে তিনি পুরোদমে সক্রিয় হবেন। নতুন দায়িত্বের বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।'
এর মধ্যে এটিএম আজহারুল ইসলামকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে, তিনি আমির হচ্ছেন। তবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা এই গুঞ্জন অস্বীকার করে বলেন, 'দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখনো তা সম্ভব নয়।'
তবে এটাও স্পষ্ট যে, মানবতাবিরোধী অপরাধের দণ্ডপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি জামায়াতের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে পুনরায় ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—এই ফিরে আসার অর্থ কী? এটি কি নতুন মেরুকরণ? নাকি সরকারের সঙ্গে জামায়াতের কোনো গোপন সমঝোতার ইঙ্গিত?
