রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন সংকট নিরসনে ইউরোপের ভূমিকা ও তাদের শর্তাবলীর ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সরাসরি সামরিক সংঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূতদের সঙ্গে মস্কোয় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার প্রাক্কালে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান, ইউরোপ যদি যুদ্ধ চায়, তবে রাশিয়া এখনই তা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। তার এই কঠোর অবস্থান আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) মস্কোর ক্রেমলিনে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পুতিন সরাসরি বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত খসড়া শান্তি চুক্তিতে কিয়েভ ও ইউরোপের পক্ষ থেকে যে সমস্ত পরিবর্তন বা শর্ত যুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে, তা রাশিয়ার কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি এই প্রস্তাবগুলিকে 'বাস্তবতাবিবর্জিত' বলে আখ্যা দেন।
যদিও ক্রেমলিনের মুখপাত্র পরে জানান যে আলোচনাটি 'গঠনমূলক' ছিল, তবে সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বৈঠকের শেষে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে মার্কিন প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্ব দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জ্যারেড কুশনার। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, মতপার্থক্য গভীর এবং এখনও সমঝোতার পথ সুদূরপরাহত।
রাশিয়ার পক্ষে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন পুতিনের সহযোগী কিরিল দিমিত্রিয়েভ ও ইউরি উশাকভ। উশাকভের ভাষ্যমতে, কিছু বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সামান্য সমঝোতা হলেও মূল বিরোধগুলো রয়ে গেছে। ইউক্রেনের দখলে থাকা অঞ্চল ছেড়ে দেওয়া এবং ইউরোপের নিরাপত্তার গ্যারান্টির মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলিতে দুই পক্ষের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার আশাবাদ সত্ত্বেও, শান্তি প্রক্রিয়ার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, চুক্তিতে ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার পথ খোলা রাখতে হবে, যা মস্কো বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে।



















