close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলি হামলা না থামা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা নয়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলি হামলা থামানো না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবে না বলে জানিয়ে দিল ইরান। জেনেভায় ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের আগেই স্পষ্ট বার্তা দিলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মধ্যপ্রাচ..

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই শুরু হয়েছে বড় কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ। তবে তার ঠিক আগেই ইরান জানিয়ে দিল, ইসরায়েলের চলমান হামলা বন্ধ না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা সম্ভব নয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এই হুঁশিয়ারি দেন শুক্রবার, জেনেভায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রাক্কালে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাঘচি বলেন,-আমেরিকানরা একাধিকবার আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি — আগ্রাসন চলতে থাকলে আলোচনার কোনো দরজা খোলা নেই। তারা এই অপরাধের অংশীদার। তাই আমাদের কোনো সম্পর্ক বা আলোচনা হতে পারে না।

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত আজ অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। প্রতিদিনই প্রাণহানি বাড়ছে, আকাশে ছুটছে ক্ষেপণাস্ত্র, বিস্ফোরণে কাঁপছে গাজা উপত্যকা, তেহরান ও হায়ফার কিছু অঞ্চলেও সাইবার আক্রমণের আশঙ্কা জোরালো হয়েছে। এমন এক সংবেদনশীল সময়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে আজকের জেনেভা বৈঠক।

আজকের এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিকরা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, ফ্রান্সের জঁ-নোয়েল বারো, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কালাস এই বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন।
বৈঠকের মূল লক্ষ্য — ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা এবং তার পরমাণু ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির লাগাম টেনে ধরা।

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বারো বলেন,-আমরা চাই ইরান এই দুঃসহ কর্মসূচি থেকে স্থায়ীভাবে সরে আসুক। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি বলেন,-এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে যেটা চলছে, তা ভয়াবহ। এখনই সঠিক সময় আমরা সংঘাত বন্ধে উদ্যোগ নিই।

ল্যামি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (X)-এ দেওয়া বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ইরান যদি আলোচনায় না ফেরে, তাহলে উত্তেজনা আরও বিস্ফোরক আকার নিতে পারে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে — ইরান কোনো অবস্থাতেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না। এই বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ডেভিড ল্যামির মধ্যে এক বৈঠকে দুই দেশ একমত হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টি গভীর পর্যবেক্ষণে রেখেছে। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বৃহস্পতিবার জানান,-প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন — যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই সংঘাতে জড়াবে কিনা।

ট্রাম্প নিজেও সাংবাদিকদের বলেন,-আমি আলোচনায় বসতে পারি, আবার নাও পারি। কেউ জানে না আমি কী করব। তবে এটুকু পরিষ্কার, ইরান এখন খুব বড় সমস্যায় আছে।

এর আগে বিবিসি সহ বেশ কিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যে ইরানে সামরিক হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। তবে প্রেসিডেন্ট তা নাকচ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন,-আমি হামলার সিদ্ধান্ত নিতে পারি, আবার পিছিয়ে আসতেও পারি। সবকিছু নির্ভর করছে আগামী কয়েকদিনের পরিস্থিতির ওপর।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি সংকটের থেকেও বিপজ্জনক। তখন অন্তত একটি আলোচনা চলছিল, কিন্তু বর্তমানে দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে রণপ্রস্তুত।
বিশ্ব কূটনীতিকরা এখন তাকিয়ে আছেন জেনেভা বৈঠকের দিকে — কারণ এখান থেকেই হয়তো নির্ধারিত হবে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ভবিষ্যৎ রূপরেখা।

ইরানের স্পষ্ট বার্তা এবং পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মুখে জেনেভা আজ এক সংকটময় ঐতিহাসিক অধ্যায়ের মুখোমুখি। আলোচনার টেবিলে সমঝোতা না এলে, যুদ্ধের দামামা আরও জোরালো হতে পারে — এবং তার প্রভাব পড়তে পারে গোটা পৃথিবীতে।

Không có bình luận nào được tìm thấy