close
  
  
         
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধে ড. ইউনূসের জোরালো আহ্বান: এটি মানবতার অস্তিত্বের সংকট
			
				
					ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বের সম্মিলিত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশনে তিনি এ সংকটকে মানবতার একটি চরম পরীক্ষা বলে অভিহিত করেন।
ড. ইউনূস বলেন, “ফিলিস্তিনে যে হত্যাযজ্ঞ চলছে তা শুধু মুসলমানদের নয়, বরং পুরো মানবতার জন্য উদ্বেগজনক। এটি মানুষের মর্যাদা রক্ষার সর্বজনীন অঙ্গীকারের প্রশ্ন।”
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা
ড. ইউনূস গাজার ১৪ মাস ধরে চলমান বর্বরতা এবং পশ্চিম তীর ও লেবাননে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “ইসরায়েলের এমন নৃশংসতা আন্তর্জাতিক আইন, কনভেনশন এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলের আগ্রাসন শুধু ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন নয়, বরং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই সহিংসতার কারণে লেবাননে বিরোধের বিস্তার এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, রাজনীতি এবং মানব সমাজে পড়বে।”
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান
ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ড. ইউনূস বলেন, “ফিলিস্তিনকে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমারেখার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটি ছাড়া এই অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি অর্জন সম্ভব নয়।”
ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের সাম্প্রতিক মতামতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে আদালত অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।”
মানবিক সংকট ও পুনর্গঠন চ্যালেঞ্জ
ড. ইউনূস বলেন, “গাজার ৪০ মিলিয়ন টন ধ্বংসস্তূপ সরাতে কমপক্ষে ১৫ বছর লাগবে। জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুসারে, এই ধ্বংসস্তূপে অ্যাসবেস্টস দ্বারা দূষণ এবং হাজারো মৃতদেহের উপস্থিতি ফিলিস্তিনিদের জন্য এক ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করবে।”
তিনি ডি-৮ নেতাদের প্রতি ফিলিস্তিন ও লেবাননের পুনর্গঠনের জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। “আমাদের আন্তর্জাতিক সম্পদ সংগ্রহের কৌশল প্রণয়ন করতে হবে এবং পুনর্গঠনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে,” বলেন তিনি।
বৈশ্বিক সম্প্রীতির আহ্বান
ফিলিস্তিনের সংকটে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সংহতির কথা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ বরাবরই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। প্রতিটি ফিলিস্তিনির জীবন গুরুত্বপূর্ণ।”
লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যে থাকা প্রায় ৬০ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসীর নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “এই সংকট শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয়, বরং বিশ্বের সব মানুষের জন্য চরম উদ্বেগের বিষয়।”
ডি-৮ সম্মেলনে বিশেষ প্রশংসা
মিশর সরকারের উদ্যোগে গাজা ও লেবাননের মানবিক সংকট নিয়ে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের বিশেষ অধিবেশন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “এই বিশেষ আলোচনা আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং সংকট সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নিতে সাহায্য করবে।”
শেষ কথা
ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, “ইসরায়েলের নৃশংসতাকে বিশ্বযুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে এবং এর দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা জরুরি। এটি শুধু ন্যায়বিচারের প্রশ্ন নয়, বরং ভবিষ্যতে এই ধরনের নৃশংসতা রোধের শর্ত।”
বিশ্ববাসীর জন্য ড. ইউনূসের বার্তা
ড. ইউনূসের বক্তব্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, মানবিক সংকট ও ন্যায়ের জন্য লড়াই কেবল একটি জাতির নয়, বরং গোটা মানবজাতির দায়িত্ব। এখন সময় এসেছে সম্মিলিত পদক্ষেপ নিয়ে এই সংকটের চিরস্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করার।
					
					
					
					
					
					
    
					
					
			
					
					
					
					
					
					
					
				
				
				
				কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি
							
		
				


















