close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেই মৃত্যুদণ্ড, ইরানে আইন পাস..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলেই মৃত্যুদণ্ড—ইরানে পাস হলো ভয়ঙ্কর আইন। শত্রু রাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ, ড্রোন তৈরি বা ভুয়া খবর ছড়ালেও মিলবে কঠোর সাজা।..

বিশ্ব রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়ানো এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান। দেশটির পার্লামেন্টে এমন একটি কঠোর আইন পাস হয়েছে, যা অনুসারে—ইসরায়েল কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা কিংবা সম্পর্ক বজায় রাখলেই তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং সেই অপরাধের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।

২০২৫ সালের জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই আইনটি পাস হয়। এতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, শুধু সরাসরি সহযোগিতা নয়, বরং গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ, প্রযুক্তি সহায়তা, সামরিক সহায়তা, এমনকি ইন্টারনেট ডিভাইস আমদানি কিংবা বিক্রির মতো কাজেও দেওয়া হবে কঠিন সাজা।

ইরানের নতুন আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরগিরি বা কোনো সহযোগিতা করা হলে সেটি ‘পৃথিবীতে দুর্নীতির’ মতো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। ইসলামী আইনে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড।

এছাড়াও যারা সরাসরি ইসরায়েলকে সামরিক, প্রযুক্তিগত কিংবা অর্থনৈতিক সহায়তা দেবে, তাদেরও একই শাস্তি পেতে হবে বলে নতুন আইনটিতে উল্লেখ রয়েছে।

আইনে শুধু কূটনৈতিক কিংবা সামরিক সম্পর্ক নয়, অননুমোদিত ইন্টারনেট সরঞ্জাম সংরক্ষণ বা ব্যবহারকেও অপরাধ হিসেবে দেখা হয়েছে।
বিশেষ করে স্টারলিংক বা অন্যান্য উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট সেবার সরঞ্জাম থাকলে ছয় মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
আর যদি কেউ ১০টির বেশি এমন ডিভাইস আমদানি বা উৎপাদন করে, তার জন্য ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে।

কোনো ব্যক্তি যদি শত্রু রাষ্ট্রের জন্য সামরিক ড্রোন তৈরি করে, সাইবার হামলা চালায় বা দেশের অবকাঠামোয় নাশকতা ঘটায়, তাহলে তারও শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এমনকি যদি কেউ এসব কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা বা চেষ্টা করে, তাতেও তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

তদুপরি, ইরানি মিডিয়াকে বাইপাস করে কেউ যদি বিদেশি মিডিয়ায় ছবি বা ভিডিও পাঠায়, এবং তা যদি জনগণের মনোবল ক্ষুণ্ন করে, তাহলে তার দুই থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

আইনে আরও বলা হয়েছে, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে জাতীয় বিভ্রান্তি, ভয় বা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, তবে তার শাস্তি ১০ থেকে ১৫ বছরের জেল।

বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের আইন ইরানে তথ্যপ্রবাহ ও স্বাধীন মতপ্রকাশের উপর ভয়ানক চাপ সৃষ্টি করবে এবং দেশে এক ধরনের “মেরুকরণ ও দমননীতি”র সুযোগ তৈরি করবে।

এই কঠোর আইন পাসের পরপরই, ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-র বিরুদ্ধে একটি ধর্মীয় ফতোয়া জারি করেন।

তিনি এই দুই বিশ্বনেতাকে "আল্লাহর শত্রু" বলে ঘোষণা করেন এবং বলেন, যারা ইসলামের শীর্ষ ধর্মীয় নেতৃত্বকে হুমকি দেয়, তারা সৃষ্টিকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।

বিশ্ব কূটনীতি ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই এই আইন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এটি ইরানে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ওপর চরম আঘাত হানবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

Nenhum comentário encontrado


News Card Generator