ইরানের 'বিজয়ের' ঘোষণা, যুদ্ধবিরতির পথে মধ্যপ্রাচ্য! ইসরায়েলকে ‘অনুশোচনায়’ বাধ্য করার দাবি তেহরানের
মধ্যপ্রাচ্যের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার এক নাটকীয় মোড়—ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষণা করেছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে এই যুদ্ধবিরতির পেছনে রয়েছে একটি ‘বিজয়গাথা’—তেহরানের ভাষায়, তারা শত্রুর ‘অত্যাচারের দৃষ্টান্তমূলক জবাব’ দিয়ে নিজেদের কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ করেছে।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সোমবার রাতের একটি বিবৃতিতে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, "ইহুদিবাদী শত্রু এবং তার ঘৃণ্য মিত্রদের ওপর যুদ্ধবিরতির জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।"
এই বিবৃতি শুধু শান্তির আহ্বান নয়, বরং এক ধরনের রাজনৈতিক বিজয়ের দাবিও।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী শত্রুদের আগ্রাসনের জবাবে "লজ্জাজনক ও দৃষ্টান্তমূলক প্রতিক্রিয়া" জানিয়েছে।
-
সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা
-
ভোররাতে ইসরায়েলের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ
এই দুটি হামলা ইরানের পক্ষ থেকে একটি কৌশলগত বার্তা ছিল। তারা বলছে, এটি ছিল "আক্রমণের প্রতি অনুপাতে এবং সময়োপযোগী জবাব।
ইরান শুধু যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়ে থামেনি, বরং হুঁশিয়ারি দিয়েছে—শত্রুর কোনো নতুন উসকানিমূলক কাজ বা লঙ্ঘনের জবাবে তাদের বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
"ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনী শত্রুর কথার ওপর কোনো ভরসা করে না। তারা ট্রিগারে আঙুল রেখেই রয়েছে—যেকোনো আগ্রাসনের তাৎক্ষণিক জবাব দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।"
এতে স্পষ্ট যে যুদ্ধবিরতি একতরফা কোনো দুর্বলতার চিহ্ন নয়। বরং এটি একটি কৌশলগত কূটনৈতিক বিজয় বলে দাবি করছে তেহরান।
অন্যদিকে, ইসরায়েল এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে গত সপ্তাহে আইআরজিসির ড্রোন ইউনিটের একাধিক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা এবং ইরানের কিছু সামরিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার জবাবে এই উত্তেজনা শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা একদিকে শান্তির ইঙ্গিত দিলেও, অন্যদিকে এটি একটি শক্তিশালী কূটনৈতিক বার্তা—তারা চাইলে আঘাত হানতে পারে এবং চাইলে নিজেদের থামাতেও জানে।
এতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সিদ্ধান্তেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
ইরান এখন আর কেবল আঘাত হানার দেশ নয়—তারা নিজেদের ‘যুদ্ধজয়ী’ বলেই ঘোষণা দিচ্ছে।
এই যুদ্ধবিরতি আপাতত মধ্যপ্রাচ্যে স্বস্তি আনতে পারে ঠিকই, তবে ইসরায়েল যদি একটুও উসকানি দেয়—তাহলে আবারও আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে সারা অঞ্চলে।