ইসরাইলি বিমানঘাঁটিতে ভয়ঙ্কর হাইপারসনিক আঘাত: ইয়েমেনি বাহিনীর দুর্ধর্ষ অভিযান
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনীতির মঞ্চে আবারও বড় ধাক্কা! ইয়েমেনের সামরিক বাহিনী এবার সরাসরি আঘাত হানল ইসরাইল অধিকৃত দক্ষিণ নেগেভ অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে। শনিবার ইয়েমেনি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে এ অভূতপূর্ব হামলার খবর নিশ্চিত করেন। সূত্র: মেহের নিউজ।
ইয়াহিয়া সারি জানান, ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এবং গাজার নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশের অংশ হিসেবেই এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশ্য সমর্থনেরও তীব্র প্রতিবাদস্বরূপ হামলা চালানো হয় বলে জানান তিনি।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, 이번 হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে ‘প্যালেস্টাইন-২’ নামের একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই সুপারসনিক গতি সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলি বিমানঘাঁটিতে নির্ভুলভাবে আঘাত হেনেছে। ইয়াহিয়া সারির দাবি, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এত দ্রুত গতির এই ক্ষেপণাস্ত্র থামাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, যা তাদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল গাজার ওপর বর্বরোচিত আগ্রাসন শুরু করার পর থেকেই ইয়েমেনি বাহিনী প্রকাশ্যে হামাস ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে একের পর এক সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়েমেনিদের এই সরাসরি সামরিক সক্রিয়তা ইসরাইলের জন্য নতুন এক নিরাপত্তা সংকট তৈরি করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশেষ করে হাইপারসনিক প্রযুক্তির ব্যবহার যুদ্ধের ব্যাকরণ পাল্টে দিচ্ছে। কারণ প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে প্রায় অক্ষম। ফলে ইসরাইলের কৌশলগত সামরিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
শুধু ইসরাইলি ঘাঁটিতেই নয়, ইয়েমেনি বাহিনী মার্কিন সমর্থিত ড্রোন, যুদ্ধজাহাজ এবং সমুদ্রপথে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরবরাহের বিরুদ্ধেও নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলাগুলো মধ্যপ্রাচ্যের বিদ্যমান সামরিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
ইয়েমেনি বাহিনীর এমন সুনির্দিষ্ট ও শক্তিশালী হামলা দেখিয়ে দিচ্ছে, তারা কেবল প্রতিরোধে নয়, আধুনিক সমরনীতিতেও অভাবনীয় উন্নতি সাধন করেছে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রশক্তিগুলো নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে— মিত্র অঞ্চলে তাদের সামরিক ঘাঁটি এবং স্ট্র্যাটেজিক স্থাপনাগুলো আসলে কতটা নিরাপদ!
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক অঙ্গনে ইয়েমেনি বাহিনীর এই হাইপারসনিক হামলা নিঃসন্দেহে একটি বড় মাইলফলক। এখন প্রশ্ন উঠেছে— ইসরাইল কি এই নতুন হুমকির মুখে নিজেদের নিরাপত্তা কৌশল ঢেলে সাজাবে? নাকি পরিস্থিতি আরও জটিল দিকে মোড় নেবে?