বিশ্ব রাজনীতির টেবিলে যেন ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের অশান্ত ইস্যু—ইরান। যুক্তরাষ্ট্র এবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ কেবল সম্ভাব্য নয়, বরং 'বাস্তব ও আসন্ন'।
এই চরম বার্তাটি ইরানকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক কূটনীতির কেন্দ্রে, জেনেভায়।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি আজ শনিবার রাতে লন্ডনে ফিরেছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে। এর আগে তিনি ওয়াশিংটন সফর করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ হুইটেকারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তিনি একটি বার্তা বহন করেন, যেখানে জানানো হয়—মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ কেবল হুমকি নয়, এটি বাস্তব এবং আসন্ন। কিন্তু এখনো কূটনৈতিক সমাধানের পথ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়নি।
জেনেভায় ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধানদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ল্যামি এই বার্তাটি উপস্থাপন করেন।
এতে ইউরোপীয় নেতারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির তীব্র নিন্দা জানান এবং বলেন,বর্তমান উত্তেজনা নিরসনের একমাত্র পথ হলো আলোচনার টেবিলে ফেরা।
তবে এখনো নতুন কোনো বৈঠকের তারিখ বা স্থান চূড়ান্ত হয়নি। তবে ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা ইরানের সঙ্গে পুনরায় আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন বিবিসির এক কূটনৈতিক সংবাদদাতা।
এই কূটনৈতিক বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন—ইসরায়েলের হামলা চলতে থাকলে, তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবে না।
অন্যদিকে ইউরোপীয় নেতারা মনে করছেন, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মাঝেই আলোচনা শুরু না করলে আরও ভয়াবহ পরিণতি আসবে।
তাদের বক্তব্য—যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হলে সবাইকে আলোচনায় ফিরতেই হবে।
ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, তিনি আগামী সপ্তাহেই মার্কিন অংশীদারদের সঙ্গে পুনরায় আলোচনায় বসবেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি কেবল একটি নতুন যুদ্ধের দ্বার নয়, বরং বিশ্ব শক্তির ভারসাম্যকেও নাড়িয়ে দিতে পারে।
-
যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দিয়েছে সরাসরি সামরিক হুমকি
-
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে ইরানকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এই বার্তা
-
ইরান বলছে, ইসরায়েলের হামলা চললে কোনো আলোচনায় তারা আসবে না
-
ইউরোপ বারবার আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছে
-
নতুন বৈঠক কবে কোথায় হবে, তা এখনো অনির্ধারিত
-
যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সমাধান চায় বললেও সময় ক্ষণিকের, যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে সবকিছু
এই মুহূর্তে বিশ্ব এক ভয়ঙ্কর ক্রসরোডে দাঁড়িয়ে। যদি কূটনৈতিক পথ ব্যর্থ হয়, তাহলে ইরানকে ঘিরে আসন্ন সামরিক সংঘাত শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, পুরো পৃথিবীকেই টেনে নিতে পারে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। এখন দেখার বিষয়—বড় পরাশক্তিগুলো শান্তির পথে ফিরে আসবে, নাকি পৃথিবী আরও একবার জড়িয়ে পড়বে অন্ধকার যুদ্ধে।