ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করতে ইসরায়েল অক্ষম: জন কেরি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংসে এককভাবে অক্ষম। এমন পদক্ষেপ নিলে গোটা মধ্যপ্রাচ্য বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে। সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক..

ইসরায়েল বারবার হুমকি দিলেও, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে তাদের একক সামরিক সক্ষমতা নেই— এমন মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম স্পর্শকাতর ইস্যু—ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কেরি বলেন, “ইসরায়েল হয়তো সাময়িকভাবে কিছু ক্ষতি করতে পারে, কিন্তু তা মধ্যপ্রাচ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।”

জন কেরি সম্প্রতি সিএনএন-কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি আশা করি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কূটনৈতিক পথে একটি কার্যকর চুক্তি করবেন। সেটি আমরা সবাই চাই। আমি সন্তুষ্ট যে তিনি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন। এটি একটি অতি জরুরি ইস্যু।”

ইসরায়েলের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরেন কেরি

সাক্ষাৎকারে কেরি সরাসরি বলেন, “ইসরায়েলের একার পক্ষে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাদের হাতে কিছু সামরিক সক্ষমতা থাকলেও, তা দিয়ে কেবল সাময়িক ক্ষতি করা সম্ভব। কিন্তু তাতে পুরো অঞ্চলটি বহু গুণ বেশি ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। এমন একটি পদক্ষেপ শুধু ইরান নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংঘাতের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।”

রোমে পঞ্চম দফার ইরান-যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা

কেরির এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে যখন ইতালির রাজধানী রোমে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পঞ্চম দফার পরোক্ষ আলোচনা শেষ হয়েছে। আলোচনায় অংশ নেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ।
আলোচনায় উভয় পক্ষ তাদের অবস্থান তুলে ধরেন এবং আলোচনার পরিবেশ ছিল শান্ত ও পেশাদার— এমনটাই জানিয়েছেন ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই।

তিনি এক্স-পোস্টে লিখেছেন, “এই দফায় আমাদের নীতিগত অবস্থানগুলো পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে গঠনমূলক পরিবেশে।” যদিও এই আলোচনায় চূড়ান্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি, তবুও উভয় পক্ষ আগ্রহ দেখিয়েছে আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে।

কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জন কেরি বরাবরই ইরান প্রশ্নে কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে। তাঁর মতে, সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে এই সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। বরং আলোচনার মাধ্যমে একে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ।

বিশ্লেষকদের মতে, কেরির এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সম্পর্কেও একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়। ইসরায়েল যেভাবে ইরানের পারমাণবিক হুমকিকে সামরিক পথে মোকাবেলার কথা বলছে, তা আদতে বাস্তবসম্মত নয় এবং মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।

 

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক বহু পুরনো। তবে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই খোলামেলা বক্তব্য নতুনভাবে বিষয়টি নিয়ে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ তৈরি হয়, নাকি আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি।

No comments found