রবিবার সকালে ইরান ইসরায়েলের তেলআবিব, হাইফা, কারমেলসহ উত্তরাঞ্চলের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সফল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার জবাবে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। ইসরায়েলি জরুরি পরিষেবা সংস্থা ‘মাগেন ডেভিড অ্যাডম’ এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে এবং জানিয়েছে, তাদের উদ্ধার দল ইতোমধ্যে আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসা তৎপরতা শুরু করেছে।
মাগেন ডেভিড অ্যাডম জানায়, এসব হামলায় অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। বিশেষ করে তেলআবিবে বেশ কয়েকটি ভবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা নিরাপত্তা ও নাগরিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, যা ইরানের পক্ষ থেকে প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। রবিবার ভোরে মার্কিন বাহিনী ইরানের নাতাঞ্জ, ফরদো ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা চালায়, যা তেহরান কঠোর প্রতিক্রিয়া হিসেবে নিয়েছে। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পরপরই ইরান তার প্রতিশোধী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে, যা ইসরায়েলের জন্য নতুন সংকট ডেকে এনেছে।
উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরসহ তেলআবিব এলাকায় আতঙ্ক ও ধ্বংসযজ্ঞ ছড়িয়ে পড়েছে। জরুরি পরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং আহতদের দ্রুততম চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী এখন উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে, এবং সম্ভাব্য নতুন হামলার আশঙ্কায় সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে পহরা জোরদার করেছে।
এই ঘটনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন ইরানবিরোধী নীতির ফলে অঞ্চলে সংঘর্ষের ঝুঁকি বেড়েছে, এবং এ ধরনের হামলা ভবিষ্যতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এখন কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। তবে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, বরং এর ফলে আগামী দিনে সংঘর্ষের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।
এই সংকটের মাঝে সাধারণ নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তেলআবিব ও উত্তরের অন্যান্য শহরে নিরাপত্তার অভাব ও আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে, যা স্থায়ী শান্তির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।