close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই বোমা তৈরির মতো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে—শুরু হলে কয়েক মাসেই তৈরি হতে পারে পারমাণবিক বোমা। আইএইএ প্রধানের সতর্কবার্তা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে।..

ইরান ফের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে এগিয়ে যাচ্ছে—এমনই গুরুতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। তাঁর ভাষ্যমতে, ইরান এখনো এমন প্রযুক্তিগত ও শিল্প সক্ষমতা ধরে রেখেছে, যার সাহায্যে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে, যা সরাসরি পারমাণবিক বোমা তৈরির পথে নিয়ে যেতে পারে দেশটিকে।

গ্রোসি সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “তেহরান এখনো সেন্ট্রিফিউজ চালুর ক্ষমতা রাখে। তাদের ইচ্ছাশক্তিই কেবলমাত্র বাধা। যেকোনো মুহূর্তে তারা কার্যক্রম আবার শুরু করতে পারে।”

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালেও, তা ইরানের সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারেনি বলেই জানিয়েছেন গ্রোসি।

“সবকিছু নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এমন নয়। এখনও অনেক কিছু বেঁচে আছে, এবং তা কার্যকরী,” যোগ করেন তিনি।
এমনকি পেন্টাগনের একটি ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনেও বলা হয়, এই হামলা কেবল ইরানকে কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে, তবে পুরো কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এই দাবিকে অস্বীকার করে বলেন, “ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।” তিনি ইরানকে আবারো হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু হয়, তবে আবারও সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে ইরান আইএইএর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সংস্থাটির সাথে সহযোগিতা আংশিকভাবে স্থগিত করেছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি বলেন, “আইএইএ প্রধান গ্রোসির পরিদর্শনের উদ্দেশ্য একেবারেই রাজনৈতিক।”
তেহরান তাদের ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোর পরিদর্শনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।

২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ইরান ১৫ বছর পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩.৬৭% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারত। কিন্তু ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সেই চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন, এবং ইরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

এরপর থেকেই ইরান ধীরে ধীরে চুক্তি লঙ্ঘন করতে থাকে। ২০২১ সালে তারা আবার ফোরদো স্থাপনায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে।

আইএইএর তথ্য অনুযায়ী, ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম এত পরিমাণে মজুত করেছে, যা দিয়ে ৯টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য মাত্র ৯০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন হয়। তাই ৬০% মানে ইরান এখন “অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থানে” রয়েছে।

ইরান বারবার দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুই শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
গত মাসেই আইএইএ জানায়, ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

সবকিছুর পরেও, আইএইএ প্রধান গ্রোসি আশাবাদী যে আলোচনার মাধ্যমে এখনো সংকট সমাধান সম্ভব। কিন্তু তেহরানের অসহযোগিতা, গোপনতা এবং সামরিক প্রস্তুতি এই আশা দিনে দিনে ক্ষীণ করে তুলছে।


 যদি ইরান সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে এগোয়, তবে এটি শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, পুরো বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য একটি ভয়ঙ্কর বার্তা হতে পারে।

Ingen kommentarer fundet