close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ইলন মাস্ক ও ড. ইউনূসের ঐতিহাসিক ফোনালাপ: নেপথ্যে যিনি!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বজুড়ে আলোচিত মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক ও নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সের নেপথ্যের মূল ব্
বিশ্বজুড়ে আলোচিত মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক ও নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সের নেপথ্যের মূল ব্যক্তিত্ব ছিলেন মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত জনপ্রিয় সাংবাদিক ড. কনক সারোয়ার। তিনি জানান, স্পেসএক্সের গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথসের সহায়তায় এই আলোচনার আয়োজন করেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। এ প্রসঙ্গে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে মুশফিকুল লেখেন, “প্রিয় বন্ধু রিচার্ড গ্রিফিথসকে অশেষ ধন্যবাদ, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ইলন মাস্কের মধ্যে একটি অসাধারণ কথোপকথনের আয়োজনের জন্য। এই সংযোগের ফলে বাংলাদেশে স্টারলিংক ও স্পেসএক্স প্রযুক্তির বিকাশে নতুন যুগের সূচনা হবে, যা উদ্ভাবন, শিক্ষা এবং অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমি এর অংশ হতে পেরে দারুণ উৎফুল্ল!” ইলন মাস্ক ও ড. ইউনূসের ফোনালাপের গুরুত্ব এই ঐতিহাসিক আলোচনার ব্যাপারে আরও বিশদ তথ্য প্রকাশ করে কনক সারোয়ার জানান, স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারও এই উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মুশফিকুল আনসারী এক টুইটে লরেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে, লরেন সেই বার্তাটি রিটুইট করে ধন্যবাদ জানান। মুশফিকুল আনসারী লেখেন, “লরেন, আপনি ও রিচার্ডের এই অসাধারণ সহায়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ড. ইউনূস ও ইলনের মধ্যকার কল বাস্তবায়নের অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত! এই সংযোগ নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে, যা ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে এবং উদ্ভাবন, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অসাধারণ সুযোগ তৈরি করতে সহায়ক হবে।” গত বছরের নভেম্বর থেকেই এই আলোচনার পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারীর প্রচেষ্টায় অবশেষে সফলভাবে এ সংযোগ বাস্তবায়ন হয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন কনক সারোয়ার। বাংলাদেশে ইলন মাস্কের আমন্ত্রণ এই আলোচনার সময় ড. ইউনূস বাংলাদেশে আসার জন্য ইলন মাস্ককে আমন্ত্রণ জানান। ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিস এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং গ্লোবাল এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস। আলোচনায় স্টারলিংকের স্যাটেলাইট প্রযুক্তির গুরুত্ব এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিজিটাল সংযোগের উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষত, স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ ও দুর্বল জনগোষ্ঠী, নারী উদ্যোক্তা এবং তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের অবকাঠামোর সঙ্গে স্টারলিংক সংযুক্ত হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে এবং আমাদের দেশ বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে আরও গভীরভাবে একীভূত হবে। স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ফোনের সম্প্রসারিত অংশ হয়ে উঠতে পারে, যা গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে সহায়তা করবে।” ইলন মাস্কের প্রতিক্রিয়া ইলন মাস্ক গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করেন এবং বলেন, “আমি বহু বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ফোনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানি। এদের ভূমিকা বৈশ্বিক পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।” তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে, তা দেশটির ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া, বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। এই আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি স্টারলিংকের কার্যক্রম সফলভাবে বাংলাদেশে চালু হয়, তাহলে তা দেশের ডিজিটাল বিপ্লবকে আরও ত্বরান্বিত করবে। এই ঐতিহাসিক ফোনালাপের ফলে বাংলাদেশে প্রযুক্তির আরও নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশাবাদী বিশ্লেষকরা।
No comments found