close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
গাজীপুরের বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ, যেখানে লাখ লাখ মুসল্লি একত্রিত হয়ে অত্যন্ত আধ্যাত্মিক পরিবেশে এই বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন। দুপুর পৌনে ২টায় এই নামাজ অনুষ্ঠিত হয়, যা ছিল বাংলাদেশের অন্যতম বড় ধর্মীয় মিলনমেলা।
ইমামতি করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ
বিশ্ব ইজতেমায় নামাজের ইমামতি করেন তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় মাওলানা জুবায়ের আহমেদ। তাঁর নেতৃত্বে মুসল্লিরা একত্রিত হয়ে আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ শ্রদ্ধা ও প্রার্থনা নিবেদন করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ মুসল্লি, বিশেষ করে গাজীপুর এবং আশপাশের জেলা থেকে, এই মহাসমাবেশে যোগ দিতে ময়দানে উপস্থিত হন। অনেকেই আগেই সেখানে পৌঁছে রাতভর অবস্থান নেন।
পূর্ণ হয়ে ওঠে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান
এ বছর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের উপস্থিতি এতটাই ব্যাপক ছিল যে ময়দান পুরোপুরি পূর্ণ হয়ে যায়। মুসল্লিরা একত্রিত হয়ে তাবলীগ জামায়াতের আদর্শ ও ইসলামী শিক্ষার প্রতি তাঁদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই বিশাল মিলনমেলায় মুসল্লিরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নামাজ আদায় করেন এবং একে অপরের সাথে ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনায় একত্রিত হন।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর
ইজতেমা ময়দানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সারা ময়দানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সাত হাজার পুলিশ সদস্যসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। তাছাড়া, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন, সিসি ক্যামেরা, হেলিকপ্টার টহল এবং মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা তাবলীগ জামায়াতের এই বৃহত্তম ধর্মীয় আয়োজনকে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে সহায়তা করছে।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন ও পর্বসমূহ
এছাড়া, গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের কার্যক্রম শুরু হয়। ইজতেমার প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্বের আয়োজক হিসেবে শুরায়ী নেজাম অনুসারীরা (মাওলানা জুবায়ের) দায়িত্ব পালন করছেন। এবারই প্রথমবারের মতো তিন পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে ভাগ করা হয়েছে।
তৃতীয় পর্বের আয়োজকরা
আগামী ২ ফেব্রুয়ারি সকালে প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্ব। পরবর্তীতে ৩ ফেব্রুয়ারি বাদ মাগরিব শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব এবং ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তা সমাপ্ত হবে। এরপর, ৮ দিন পর ১৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ২০২৫ সালের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা সমাপ্ত হবে।
একটি ঐতিহাসিক ধর্মীয় সমাবেশ
এই বিশাল ধর্মীয় সমাবেশে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিরা শুধু ধর্মীয় অনুশীলন ও তাবলীগ জামায়াতের মূল উদ্দেশ্যেই একত্রিত হন না, বরং এটি সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব এবং সহযোগিতার চেতনা তৈরি করার একটি বড় সুযোগ হিসেবে কাজ করে। বিশ্ব ইজতেমা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে একাত্মতা এবং ইসলামের সত্য শিক্ষা প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।
এটি একটি স্মরণীয় মুহূর্ত, যা আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Nenhum comentário encontrado