'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
ঈদযাত্রার হুড়োহুড়ি শুরু: অনলাইনে মিলছে ৫ জুনের ট্রেন টিকিট
পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রেলযাত্রীদের জন্য শুরু হয়েছে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের বিশেষ আয়োজন। ঈদের আগের সপ্তাহজুড়ে ঘরমুখো মানুষের ঢল সামলাতে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবার আগেভাগেই টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেয়। সেই ঘোষণা অনুযায়ী আজ ২৬ মে (সোমবার) থেকে মিলবে ৫ জুন তারিখের ট্রেন টিকিট। পুরো টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে অনলাইনে, যাতে ঘরে বসেই যাত্রীরা সহজে তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের টিকিট নিশ্চিত করতে পারেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঈদের সম্ভাব্য দিন ৭ জুন ধরে এবারের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিক্রির প্রথম দিনেই আজ দেওয়া হচ্ছে ঈদের ঠিক দুই দিন আগের টিকিট, অর্থাৎ ৫ জুনের। এই টিকিট সংগ্রহে প্রতিদিনের মতোই সকাল থেকে হাই ট্রাফিক প্রত্যাশা করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
আজ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি। এ অঞ্চলের যাত্রীরা নির্দিষ্ট অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিজ নিজ ট্রেনের সিট বুক করতে পারবেন। অন্যদিকে, পূর্বাঞ্চলের ট্রেনগুলোর টিকিট পাওয়া যাবে দুপুর ২টা থেকে।
রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবার শুধুমাত্র ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর জন্যই অগ্রিম টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মোট আসন সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ হাজার ৩১৫টি। এই বিপুল সংখ্যক আসন নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্মপরিকল্পনায় বেশ কিছু কৌশল গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রযুক্তিগত নজরদারি, টিকিট বুকিংয়ের সময়সীমা নির্ধারণ, এবং বিশেষ ট্রেন পরিচালনার উদ্যোগ।
এদিকে, শতভাগ টিকিট অনলাইনে দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনেক যাত্রী স্বস্তি প্রকাশ করলেও প্রযুক্তিগত সমস্যার আশঙ্কাও থাকছে। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, টিকিট বিক্রির সময় অনলাইন সার্ভার জ্যাম, অ্যাপে ঢুকতে না পারা কিংবা ট্রানজেকশন সমস্যার কারণে অনেক যাত্রী সমস্যায় পড়েছেন। তবে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার সার্ভার সাপোর্ট এবং ডিজিটাল সিস্টেম আগের চেয়ে আরও বেশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রেল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক যাত্রী ও বিশেষজ্ঞ মহল। তারা মনে করছেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হলে ঈদযাত্রা হবে আরামদায়ক ও নিরাপদ।
তবে সবকিছুর পরও ঈদ সামনে রেখে টিকিট পাওয়ার জন্য যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, তা একধরনের অনলাইন যুদ্ধ বলেই মনে করছেন অনেকেই। কারণ কয়েক সেকেন্ডের দেরিতেই হারিয়ে যেতে পারে কাঙ্ক্ষিত টিকিট।
রেলওয়ে অনুরোধ জানিয়েছে, টিকিট সংগ্রহে যেন যাত্রীরা ধৈর্য ধারণ করেন এবং নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করেন। সেইসঙ্গে ফেক অ্যাপ বা প্রতারক ওয়েবসাইট থেকেও সাবধান থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এইভাবে টিকিট সংগ্রহ প্রক্রিয়ার সূচনা হলো আজ থেকে। আগামী কয়েক দিন ধরে প্রতিদিনই নতুন তারিখের টিকিট অনলাইনে ছাড়া হবে। ফলে ঈদের আনন্দ শুরু হয়ে গেল একধরনের প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতা দিয়েই।
