পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি উপলক্ষে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই হাজার হাজার পর্যটক সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। গতকাল রোববার সকাল থেকেই কক্সবাজার শহরের প্রবেশপথে ছিল পর্যটকবাহী বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ির দীর্ঘ সারি। এতে শহরে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
পর্যটকদের মূল ভিড় দেখা গেছে লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে সমুদ্রস্নানে মেতেছেন, আবার কেউ কেউ সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন বা বিচ বাইক ও ঘোড়ার পিঠে চড়ে সময় কাটাচ্ছেন।
হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ঈদের আগেই অধিকাংশ কক্ষ বুক হয়ে গেছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, শহরের প্রায় ৯৫ শতাংশ আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট পূর্ণ।
এদিকে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, র্যাব, এবং স্বেচ্ছাসেবক দল। নজরদারির জন্য বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার ও সিসিটিভি ক্যামেরা।
ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভ্রমণকে আনন্দমুখর করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সৈকতের প্রতিটি গোলঘরে পুলিশ অবস্থান করছে। একদিকে মোবাইল টিম অন্যদিকে সাদা পোশাকে পুলিশ সমুদ্র সৈকতে ঘুরছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে একাধিক মোবাইল টিম পর্যটকদের সব ধরনের হয়রানি রোধে মাঠে কাজ করছে।
এদিকে ৫-৬ লক্ষ পর্যটক আসাতে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পরেছে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট, পরিবহন, দোকানপাটসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আনন্দের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। ঈদের এই দীর্ঘ ছুটিকে ঘিরে কক্সবাজারে কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সপরিবারে কক্সবাজারে আসার পরিকল্পনা অনেক আগে করেছিলাম। এত মানুষ হবে ভাবিনি, তবে ভালোই লাগছে। নিরাপত্তা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আগের চেয়ে ভালো।’
নরসিংদী থেকে আগত শিক্ষার্থী সুস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে ছুটির দিনগুলো উপভোগ করতে কক্সবাজারে এসেছি। সৈকতের সৌন্দর্য, খাবার আর মানুষের আনাগোনা সবকিছু মিলিয়ে আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”
ঈদুল আজহার এই ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের যে ভিড় দেখা যাচ্ছে, তা শুধু দেশের পর্যটনপ্রেমীদের আগ্রহই নয়, বরং দেশের পর্যটন খাতের সম্ভাবনাকেও সামনে নিয়ে আসছে।
close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
لم يتم العثور على تعليقات