রোদ ঝলমলে দুপুর। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস চত্বরজুড়ে এক অন্যরকম উচ্ছ্বাস। ছোট ছোট শিশুরা খিলখিল করে হাসছে, তাদের চোখে এক অদ্ভুত উজ্জ্বলতা। ঈদ আসছে, আর তার আগেই তারা পেয়েছে এক চমৎকার উপহার—ভালোবাসা আর যত্ন, যা কোনো দামি পোশাক বা খেলনার চেয়েও মূল্যবান।
বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালযয়ের ছোট্ট স্বপ্ন এবং আমার বাংলা তরুণ সংঘ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ ২০২৫ যেন ছিল শুধুই কিছু উপহার বিতরণের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এক আনন্দঘন মিলনমেলা।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ছোট্ট স্বপ্নের সদস্য সচিব ড. সুলতানা রাজিয়া। তার কথায় ফুটে উঠছিল শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয়, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বপ্ন গড়ে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা। তার উদ্বোধনী বক্তব্য যেন শিশুদের জন্য এক নতুন আশার আলো হয়ে জ্বলজ্বল করছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুরঞ্জিত মণ্ডল এবং ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা আবু জাফর মোহাম্মদ সাদি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উৎসাহিত করতে, পাশে থাকার আশ্বাস দিতে। তারা শুধু আনুষ্ঠানিক অতিথি ছিলেন না, বরং শিশুদের হাসিমুখ দেখে তাদের চোখেও আনন্দের ঝিলিক ছিল।
অনুষ্ঠান সফল করতে অ্যালামনাই সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। শামীমা সুলতানা মায়া, যিনি ছোট্ট স্বপ্ন অ্যালামনাই-এর সভাপতি, এই আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করতে দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন। তার পাশে ছিলেন এস এম মেহেদী হাসান বাবু, ৮ম কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং অ্যালামনাইয়ের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, যিনি বরাবরের মতোই সংগঠনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
একইভাবে, ৯ম কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ও ছোট্ট স্বপ্ন অ্যালামনাইয়ের সংগঠন সম্পাদক তাহমিদ জাকী দিনরাত পরিশ্রম করে পুরো আয়োজনকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে ভূমিকা রাখেন।
এই মহতী উদ্যোগে পাশে ছিলেন আমার বাংলা তরুণ সংঘের সভাপতি লতিফুল ইসলাম লিংকন এবং সংগঠনের উপদেষ্টা নাহিম আহমেদ। তারা শুধু সহযোগিতাই করেননি, বরং শিশুদের জন্য ভালোবাসা ও সহমর্মিতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আল মারুফ, যিনি ছোট্ট স্বপ্ন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া, সাধারণ সম্পাদক সাকিব মোল্লা তার দল নিয়ে অনুষ্ঠানটি সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সবশেষে, সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব সেই স্বেচ্ছাসেবকদের, যারা দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন শুধুমাত্র শিশুদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটানোর জন্য। তাদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি, আন্তরিক সহযোগিতা এবং ভালোবাসার স্পর্শেই এই আয়োজন সত্যিকারের এক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
এই আয়োজন কোনো একদিনের গল্প নয়, বরং একটি প্রতিশ্রুতি—শিশুদের স্বপ্নের পথে আমাদের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার। ঈদের আগে তাদের মুখে যে হাসি ফোটানো গেছে, সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।



















