close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ই স রায়ে লের প্রা ণঘা তী মিশন ধু লি সা ৎ!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচিকে হত্যার জন্য ইসরায়েলের ভয়ানক ‘অপারেশন নার্নিয়া’ শুরু হয়েছিল, তবে তা রুদ্ধশ্বাস গোয়েন্দা অভিযানে ব্যর্থ করে দিয়েছে ইরান। কীভাবে ফাঁস হলো এই ‘হিট লিস্ট’? কারা ছিল ..

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচিকে হত্যার লক্ষ্যে চালানো ইসরায়েলের পরিকল্পিত গোপন অভিযান চিহ্নিত করে ব্যর্থ করে দিয়েছে ইরানি গোয়েন্দা বাহিনী। শুক্রবার ইকোনোমিকস টাইমস প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিস্ফোরক তথ্য।

ইরান দাবি করেছে, এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত ইসরায়েলি হিট অপারেশন, যার লক্ষ্য ছিল দেশটির উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিককে হত্যার মাধ্যমে তেহরানে অস্থিরতা তৈরি করা এবং পারমাণবিক আলোচনার পথ রুদ্ধ করা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের গোয়েন্দারা তাদের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যসূত্রে জানতে পারেন—পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচির ওপর একটি গুপ্ত হত্যা অভিযান পরিচালিত হতে যাচ্ছে। এই তথ্য সামনে আসার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয় দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম জানায়, ইসরায়েলের অপারেশনটির কোডনেম ছিল "অপারেশন নার্নিয়া", যার আওতায় প্রস্তুত করা হয়েছিল একটি ‘হিট লিস্ট’। সেই তালিকার শীর্ষে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ হোসেইন রঞ্জবারান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে এই চক্রান্তের কথা প্রকাশ্যে আনেন। তিনি লেখেন:-আমাদের মায়ের মাটির অজানা সৈনিকদের (অর্থাৎ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের) সক্রিয় নজরদারি না থাকলে হয়তো এই মিশন সফল হয়ে যেত। আলহামদুলিল্লাহ, এই বিশাল ষড়যন্ত্র আমরা প্রতিহত করেছি।

তিনি আরও জানান, জেনেভা সফরের ঘোষণার পরপরই ইসরায়েলি হামলার সম্ভাবনা নিয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো অতিরিক্ত সজাগ ছিল। কারণ, সেখানে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছিল। এই সফর ইসরায়েল যে চায়নি, তা স্পষ্ট হয়েছে এই হত্যাচেষ্টার মাধ্যমে।

সাইয়্যেদ আব্বাস আরাঘচি ইরানের এক অভিজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত কূটনীতিক। তিন দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ইরানের পররাষ্ট্র নীতিতে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিশেষ করে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনায় তিনি ছিলেন ইরানের মুখ্য প্রতিনিধি। আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকা আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হলেও, ইসরায়েলের চোখে তিনি ছিলেন বড় একটি বাধা।

তিনি নিজেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধানের চেয়ে বেশি একজন ‘মাতৃভূমির সৈনিক’ মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন রঞ্জবারান।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান-ইসরায়েল টানাপোড়েনের এই সর্বশেষ অধ্যায় কেবল মাত্র শুরু। ইসরায়েলের এই স্পষ্ট সন্ত্রাসী কৌশল আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হতে পারে। তবে আরও ভয়ংকর হামলার সম্ভাবনা এখন থেকেই উড়িয়ে দিচ্ছে না ইরানি গোয়েন্দারা।

বিশ্ববাসীও ভাবছে—কূটনৈতিক আলোচনার মধ্যেই যদি হত্যাচেষ্টা হয়, তাহলে আগামীর পথ কতটা রক্তাক্ত হতে পারে?

ইরানের গোয়েন্দাদের সফল অভিযানে শুধু একটি প্রাণই রক্ষা পায়নি, বরং ভেঙে গেছে একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদী প্রচেষ্টা। ইসরায়েলের এই ‘অপারেশন নার্নিয়া’ হয়তো একদিন ইতিহাসে লেখা হবে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের নাম হিসেবে।

আরাগচির প্রাণ রক্ষা শুধু একটি মানুষ নয়, একটি দেশের কূটনৈতিক ভবিষ্যতকেই রক্ষা করল।

No comments found


News Card Generator