close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ই স রা ই ল জু ড়ে সাইরেন বাজছে, মানুষ ছুটছে আশ্রয়ের খোঁজে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরাইলের ব্যালিস্টিক হামলায় কাঁপছে মধ্যপ্রাচ্য, সাইরেনের শব্দে আতঙ্কিত জনগণ বোমা সেল্টারে। ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও বাস্তবতা ভয়াবহ—যুদ্ধ থামেনি, বরং আরও ছড়িয়ে পড়ছে।..

মধ্যপ্রাচ্য যেন আবারও ভয়ংকর যুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যখন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিচ্ছেন, তখন ইরান ও ইসরাইলের আকাশে উড়ছে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। একদিকে শান্তির বার্তা, আর অন্যদিকে মুহূর্তে মুহূর্তে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ—এই দ্বৈত বাস্তবতা এখন ইসরাইলজুড়ে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর তথ্যমতে, ইরান এখন পর্যন্ত তিনটি ধাপে ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়েছে। প্রথম দুই ধাপে মোট ছয়টি মিসাইল ছোড়া হয়। তবে তৃতীয় ধাপে কতটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, তা এখনো অজানা। এ হামলায় দক্ষিণ ইসরাইলে একটি সাততলা ভবনে সরাসরি আঘাতের খবর পাওয়া গেছে। এতে অন্তত তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং আরও পাঁচজন হালকা জখম হয়েছেন।

আল জাজিরার রিপোর্টার হামদাহ সালহুত জানান, পুরো ইসরাইলজুড়ে এখন বেজে চলেছে সতর্কতামূলক সাইরেন। সাধারণ মানুষ হুড়োহুড়ি করে ছুটছে আশ্রয় কেন্দ্র বা বোমা সেল্টারের দিকে। যুদ্ধের শঙ্কায় আকাশ ভারী হয়ে আছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, “এই পরিস্থিতির শেষ কোথায়—আমরাও জানি না।” অর্থাৎ, ট্রাম্পের শান্তির ঘোষণা যতটা রাজনৈতিক, বাস্তবতার সঙ্গে তার ততটাই দূরত্ব।

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরাইলি সেনাবাহিনী পাঁচবার হামলার সতর্কতা জারি করে। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়—এই অঞ্চল এখনো যুদ্ধের আগুনে জ্বলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক তো নয়ই, বরং আরও সহিংস হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ সরাসরি হলেও এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে।

এই সহিংস পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে মুসলিম দেশগুলোর দ্বিচারিতা। যখন ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিক্রিয়া জানায়, তখন সৌদি আরব, কাতারসহ অনেক মুসলিম রাষ্ট্র একবাক্যে এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দেয়। কিন্তু যখন ইসরাইল দিনের পর দিন ফিলিস্তিনে বোমা বর্ষণ করে, শিশু হত্যা করে কিংবা হাসপাতাল ধ্বংস করে—তখন এই তথাকথিত ‘বিশ্ব বিবেক’ নিশ্চুপ থাকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখানে দ্বিমুখী নীতিই সবচেয়ে বড় সমস্যা। ইরানের প্রতিক্রিয়া অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে, কিন্তু বড় প্রশ্ন হলো—ইসরাইল কি আন্তর্জাতিক আইন মানছে? তাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতৃত্বের অবস্থান কোথায়?

ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ চলতে থাকলে এর পরিণতি শুধু এই দুই দেশের জন্যই নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য হতে পারে মারাত্মক। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের ভঙ্গুর স্থিতিশীলতা আরও ভেঙে পড়বে। এর প্রভাব তেল বাজার, শরণার্থী সংকট এবং জ্বালানি নিরাপত্তায় পড়বে।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনসহ বিশ্ব পরাশক্তিগুলো এই সংঘাতে সরাসরি না জড়ালেও তাদের ভূমিকাও নির্ধারণ করবে যুদ্ধ কতটা ভয়াল রূপ নেবে।

ট্রাম্পের ঘোষণা যতই কূটনৈতিক হোক, বাস্তবতা বলছে—যুদ্ধ থামেনি। বরং এক ভয়ঙ্কর আগুন ধীরে ধীরে পুরো অঞ্চলকে গ্রাস করছে। বিশ্ব এখন অপেক্ষা করছে—এই আগুন নিভবে, না আরও জ্বলবে।

No comments found