close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ই স রা য়ে লে র বিরুদ্ধে বিশ্বের কাছে মা ল য়েশি য়া র আহ্বান

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে চাপ তৈরির আহ্বান জানিয়ে বললেন—ন্যায়ের পক্ষে থাকা এখন সময়ের দাবি। যুদ্ধ নয়, চাই কূটনৈতিক সমাধান।..

আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আরও সংগঠিত হওয়ার ডাক দিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। গাজায় নারী-শিশু হত্যাসহ ইরানকে লক্ষ্য করে একের পর এক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বশান্তি আজ বিপন্ন। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে থামাতে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানালেন তিনি।

আলজাজিরা’র বরাতে জানা গেছে, আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন,ইসরায়েল যখন অন্য দেশের ওপর হামলা চালায় এবং নিরীহ মানুষকে হত্যা করে, তখন এর প্রতিক্রিয়া আসাটাই স্বাভাবিক। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—আমরা ন্যায়ের পক্ষে।

তিনি গাজায় চলমান নারী-শিশু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং বলেন,এই ভয়াবহতার মধ্যে এখন ইসরায়েল ইরানকে আক্রমণ করছে, আবার ইরানও পাল্টা জবাব দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বাইরের শক্তিগুলোর হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

আনোয়ার একপ্রকার প্রতিবাদ ছুঁড়ে বলেন,যদি ইরানকে প্রতিক্রিয়া জানাতে না দেওয়া হয়, তবে কেন ইসরায়েলকে বারবার এমন কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে?

এই মন্তব্যে পরিষ্কার—মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক মঞ্চে দ্বিমুখী নীতির বিরোধিতা করছে এবং নিরপেক্ষ ন্যায়বিচারের পক্ষ অবলম্বন করছে।

তিনি সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানান এবং বলেন,বর্তমান পরিস্থিতিতে উত্তেজনা নয়, বরং শান্তিপূর্ণ আলোচনাই একমাত্র পথ।

আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (OIC) সম্মেলনের ফাঁকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাজি হাসান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
এই বৈঠকে মালয়েশিয়া জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সব পক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।

গত ১৩ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায়—ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানে—হামলা চালিয়েছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে,ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্বেই সমন্বয় ছিল। ইসরায়েলি বিমান ও মিসাইল ইউনিটও ইরানে পৃথকভাবে হামলা চালিয়েছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, এই হামলায় ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক বাংকার লক্ষ্য করে বাংকার বাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়।

ইরানের পরমাণু সংস্থা জানায়, তারা তাদের কর্মসূচি বন্ধ করবে না। ফোরদো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যা প্রমাণ করে—তারা হামলার জন্য প্রস্তুত ছিল।

জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে,
হামলার পরপরই ওইসব স্থাপনা থেকে কোনো বিকিরণের মাত্রা বেড়ে যায়নি, এমন তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

  • চীন ও রাশিয়া এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে এবং জাতিসংঘে স্থায়ী শান্তির আহ্বান জানিয়েছে।

  • যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ভারত ও সৌদি আরব—সবাই কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষেই রয়েছে।

  • মেক্সিকো, চিলি, কিউবা ও ভেনেজুয়েলা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিরোধিতা করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন,এটি ভয়াবহ ও বিপজ্জনক একটি উত্তেজনা। এর কোনো সামরিক সমাধান নেই। কেবল কূটনৈতিক পথই উত্তরণের একমাত্র উপায়।

মালয়েশিয়ার বার্তা আজ শুধু মুসলিম বিশ্বের জন্য নয়, বরং মানবতা ও বৈশ্বিক শান্তির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বের আগুনে যেন বিশ্ব আর না পুড়ে যায়—এমনটাই চাইছে আজকের বিবেকবান পৃথিবী।

No comments found