close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ই রা নে র পরমাণু কর্মসূচি ধ সিয়ে দেয়ার দাবি নেতানিয়াহুর

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নেতানিয়াহু বললেন, ইরানের পারমাণবিক হুমকি ধ্বংস করে ইসরায়েল পেয়েছে ঐতিহাসিক বিজয়। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দা বলছে, ইরানের পরমাণু কেন্দ্র এখনো অক্ষত!..

ধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ আরও একধাপ চড়া হলো ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এক ভিডিও বার্তায় দেওয়া বিস্ফোরক মন্তব্যকে ঘিরে। মঙ্গলবার তিনি একটি ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল এক ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ অর্জন করেছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পর্যন্ত টিকে থাকবে।

নেতানিয়াহু তার বক্তব্যে বলেন, আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নিতাম, তাহলে অচিরেই ইসরায়েল ধ্বংসের মুখোমুখি হতো। ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র ও ২০ হাজার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল। তবে এখন এসব হুমকি আমরা সফলভাবে দূর করতে পেরেছি।

নেতানিয়াহু এসময় সরাসরি ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ধ্বংস করার দাবি তোলেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষায় এই অভিযান ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমরা সময়ের সঠিক ব্যবহারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। এতে ইরানের ভূগর্ভস্থ ফোরদো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ধ্বংস হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহুর এই দাবি আন্তর্জাতিক মহলে বেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা বলছে, ইরানের বেশিরভাগ পারমাণবিক স্থাপনাই এখনও অক্ষত রয়েছে। বিশেষ করে ফোরদোর মতো গোপন এবং শক্তিশালী কেন্দ্র ধ্বংসের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এমনকি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) সূত্র জানায়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সাময়িক ব্যাঘাত ঘটলেও সেটি "ধ্বংস" হয়নি। এখনও দেশটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সক্ষম।

নেতানিয়াহু বক্তব্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকাও বিশেষভাবে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আমরা ইরানের হুমকি মোকাবিলায় যেভাবে সহযোগিতা পেয়েছি, তার পেছনে ট্রাম্পের অবদান অসামান্য। হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের মতো বন্ধু আর কখনও ছিল না।”

তিনি আরও বলেন, “আমেরিকান বাহিনী আমাদের পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ নেয়। বিশেষ করে কৌশলগত দিক থেকে মার্কিন কূটনৈতিক তৎপরতা, রন ডার্মার এর মতো মন্ত্রীর সম্পৃক্ততা এবং সেনা সহায়তা ছিল ইরানের হুমকি প্রতিরোধে মোক্ষম অস্ত্র।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতানিয়াহুর বক্তব্য এক ধরনের ‘কৌশলগত প্রচার’ হতে পারে, যার মাধ্যমে তিনি ইসরায়েলি জনগণ এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের সামনে নিজের অবস্থানকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক স্যামুয়েল ডেভিস বলেন, “নেতানিয়াহুর এই দাবিগুলো অনেকটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বাস্তবে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস করা এতটা সহজ নয়।”

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। কিন্তু এবারের সংঘাত এবং যুদ্ধপরবর্তী নেতানিয়াহুর এই চাঞ্চল্যকর বক্তব্য পুরো মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, এই ‘ঐতিহাসিক বিজয়ের’ দাবি আদৌ টিকে থাকে কি না, নাকি আন্তর্জাতিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে ভিন্ন কোনও চিত্র।

कोई टिप्पणी नहीं मिली