মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন করে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর দেশটির একাধিক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক গোলযোগ দেখা গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ইরানের দিক থেকে ইহুদিবাদী ভূখণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে মোট আটটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট-এর বরাতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির কৌশলগত স্থাপনার কাছে একটি ক্ষেপণাস্ত্র সজোরে বিস্ফোরিত হয়। ফলে ওই অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারে ভেঙে পড়ে, এবং বহু শহরে অন্ধকার নেমে আসে।
ইসরায়েলের জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান — ইসরায়েল ইলেকট্রিক করপোরেশন জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার এবং ঝুঁকিপূর্ণ সরঞ্জাম অপসারণে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলার সময় প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে সাইরেন বেজে ওঠে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের বহু শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সাধারণ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে পালাতে বাধ্য হয়।
চ্যানেল ১৩-এর তথ্য মতে, ১৩ জুনের পর থেকে আজ ২৩ জুন পর্যন্ত এই হামলাকে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি আতঙ্কের ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অনেক এলাকাবাসীকে দীর্ঘ সময় ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করতে হয়েছে, যা জনমনে এক প্রকার যুদ্ধ-সময়ের অনুভূতি এনে দিয়েছে।
এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মনে করছেন, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা আরও নতুন মাত্রা নিচ্ছে এবং যেকোনো সময় এটি বৃহত্তর সংঘাতে রূপ নিতে পারে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, ইরানের এই হামলা একটি "পাল্টা জবাবের বার্তা" হিসেবেই এসেছে, যা ইসরায়েলের আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডের পরিণতি হিসেবেও ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার এই সংঘাত গোটা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়া শুধু একটি সাময়িক ক্ষতি নয় — এটি এক গভীর সংকেত যে, যুদ্ধের ছায়া এখন আর সীমান্তে সীমাবদ্ধ নয়, নাগরিক জীবনেও প্রবেশ করছে।