সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ১১১ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৩০ জন সৌদি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টাল।
শনিবার, ২৪ মে প্রকাশিত বুলেটিনে জানানো হয়, হজপালনে গিয়ে সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত ১১১ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া সৌদি আরবের বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে ২৩ হাজার ৩০৩টি চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র ইস্যু করা হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায়, অসুস্থতা বা শারীরিক সমস্যার পরিমাণ কতটা ব্যাপক।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সেল জানায়, শুধু অসুস্থতাই নয়, সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৯ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন। নিহতদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ এবং একজন নারী। মৃত্যুর ঘটনাগুলোর মধ্যে ৪ জন মক্কায় এবং ৫ জন মদিনায় ইন্তেকাল করেছেন। এই দুঃসংবাদ বাংলাদেশে স্বজনদের মধ্যে শোক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে দিয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবার সৌদি আরবে মোট ৫৬ হাজার ৭৬৬ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী গিয়েছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় গেছেন ৪ হাজার ৫৮৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গেছেন ৫২ হাজার ১৮৩ জন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের হজ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি যাত্রা শুরু হয়েছিল ২৯ এপ্রিল থেকে, যা শেষ হবে ৩১ মে। হজ শেষে দেশে ফেরার প্রথম ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন এবং শেষ ফ্লাইট নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ জুলাই।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর সংখ্যা নির্ধারিত হয়েছে ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন। যদিও সর্বমোট কোটা পূরণ হয়নি বলে প্রাথমিক তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও মৃত্যুর ঘটনা এ বছর হজযাত্রীদের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হজ পালন একটি শারীরিকভাবে কষ্টসাধ্য ইবাদত। তাই ধর্ম মন্ত্রণালয় আগেই হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা এবং মৌলিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, অনেকেই অতিরিক্ত গরম, ক্লান্তি, কিংবা পুরোনো রোগের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
উপসংহার:
পবিত্র হজের এই মহান যাত্রায় বাংলাদেশি হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও পরিবারগুলোর উচিত যাত্রীদের প্রতি আরও নজরদারি ও যত্নবান হওয়া, যাতে কোনো বড় বিপর্যয় এড়ানো যায়। একইসঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন, যাতে দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত হয়।