হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে ফিরে দেশে ফেরার পর আবারও হাসপাতালে যেতে হলো বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে। এভারকেয়ার হাসপাতালে আজ সন্ধ্যায় যাচ্ছেন তিনি। তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে দলে এবং সমর্থকদের মধ্..

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাচ্ছেন নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবে। আজ বুধবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে তিনি হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন।

দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গত কয়েক বছর ধরেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে। লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং আর্থ্রাইটিসসহ একাধিক শারীরিক জটিলতায় ভোগা এই প্রবীণ রাজনীতিক নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করে চলেছেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতেই, ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন বেগম জিয়া। সেখানে পৌঁছে তিনি বিখ্যাত 'লন্ডন ক্লিনিকে' ভর্তি হন এবং টানা ১৭ দিন সেখানেই চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এরপর ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডনের বাসায় অবস্থান করতে থাকেন। সে সময়ও তার চিকিৎসা চলতে থাকে অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি এবং অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে।

দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই ফের হাসপাতালে যেতে হওয়ায় দলে, পরিবারে ও রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলছেন, “দেশে ফেরার পর বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও হঠাৎ করে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, যা উদ্বেগজনক।

বিগত সরকার আমলে বেগম জিয়াকে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখা হয়। সে সময় দেশি-বিদেশি নানা মহলের অনুরোধেও সরকার তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে রাজি হয়নি। বরং বিভিন্ন মামলার ফাঁদে ফেলে, চিকিৎসার সুযোগ থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির।

তবে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় দৃশ্যপট বদলেছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা একের পর এক মামলায় উচ্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে—এগুলো ছিল হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

নতুন করে হাসপাতালে যাওয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, "তিনি এখনো দুর্বল। বিদেশে চিকিৎসা করিয়েও তার অসুস্থতা পুরোপুরি সেরে ওঠেনি। আমরা প্রার্থনা করছি, যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারও সক্রিয়ভাবে দলের নেতৃত্ব দিতে পারেন।

অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রার্থনা করছেন, “বেগম জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন এবং দেশকে আবার নেতৃত্ব দিতে পারেন।”

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক অঙ্গনে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা শুধু একটি ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতিতে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। কারণ একজন প্রবীণ ও জনপ্রিয় নেত্রী হিসেবে তিনি এখনো দেশের বৃহৎ অংশের জনগণের মধ্যে প্রভাব রাখেন।

এখন নজর এভারকেয়ার হাসপাতালের দিকেই—সেখানে তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা কী বলবেন, সেটাই জানার অপেক্ষায় গোটা দেশ।

कोई टिप्पणी नहीं मिली