close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

হাসপাতালে গায়ে পেট্রল ঢেলে আ'ন্দো'লনে আ'হ'তদের আ'ত্ম'হননের চেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহতরা মঙ্গলবার হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে ঢুকে অবরুদ্ধ করে এবং পেট্রল ঢেলে আত্মহননের চেষ্টায় পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তোলে। সেনাবাহ..

জধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল মঙ্গলবার এক ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও চিকিৎসাধীন থাকা কয়েকজন রোগী হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে ঢুকে পেট্রল ঢেলে আত্মহননের চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, গত ২৭ মে মঙ্গলবার দুপুরে, আন্দোলনকারীদের একটি দল চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকে উঠে এসে সরাসরি পরিচালকের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী। তারা প্রথমে পরিচালকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন, পরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আকতার হোসেন নামের একজন যুবক পেট্রল বোতল বের করেন এবং গায়ে ঢেলে আগুন লাগানোর হুমকি দেন।

পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় পরিচালক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে খবর দেন। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সেনাবাহিনীর একটি টিম ও পুলিশ সদস্যরা। তাদের হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়।

ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আহতদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। অনেকে বলছে কিছু সদস্য বিদেশে চিকিৎসার জন্য অনুদান পেয়েছে, কিন্তু তা সবার মধ্যে ভাগ হয়নি। কেউ কেউ দাবি করে আমি একপক্ষের হয়ে কাজ করছি, এমনকি বিদেশে পাঠানোর তালিকাও নাকি আমি ঠিক করছি। অথচ এটি বিশেষজ্ঞ কমিটি নির্ধারণ করে।”

তিনি আরও বলেন, “৪০-৫০ জন একসাথে রুমে ঢুকে যায়। গায়ে পেট্রল ঢেলে একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকে। আমি ভয় পেয়ে তাদের শান্ত করতে চেষ্টা করি এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফোন দিই। সেনাবাহিনী আসার পর তারা কক্ষ ত্যাগ করে।”

এই ঘটনার দুই দিন আগেই, গত রবিবার, একই হাসপাতালে চারজন আহত আন্দোলনকারী বিষপানের মাধ্যমে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, “তারা সত্যিই বিষ পান করেছেন কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান, “তারা কেরোসিন ও পেট্রল নিজেদের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আমরা গিয়ে বোতলগুলো উদ্ধার করি এবং বোঝানোর চেষ্টা করি। পরে সেনাবাহিনী এসে তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য করে।”

ছাত্র আন্দোলনকারীদের দাবি, তাদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে কিছুই কার্যকর হয়নি। তহবিল অনিয়ম, বিদেশযাত্রার তালিকায় পক্ষপাত, ও প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে তাদের বক্তব্যে।

এ ঘটনায় ছাত্র আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা। আন্দোলনকারীদের জীবন-মরণ পরিস্থিতিতে চলে যাওয়া এবং প্রশাসনের দেরিতে প্রতিক্রিয়া—এই দুইয়ের সমন্বয়ে দেশের অন্যতম একটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান পরিণত হয়েছে রাজনৈতিক দাবিদাওয়ার কেন্দ্রস্থলে।

Ingen kommentarer fundet