হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় ঢাবিতে বিক্ষোভ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হয়ে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর প্রতীক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাল শিক্ষার্থীরা। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার এবং ভারতের হস্তক..

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ। এই হামলার জন্য সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানান।

বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে শুরু হয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্ররা অগ্নিগর্ভ বক্তব্য দেন এবং একের পর এক প্রতিবাদী স্লোগানে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তোলেন।

স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল রাজু ভাস্কর্য: সমাবেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
হাসনাত ভাই আমার ভাই, আহত কেন? ইন্টারিম জবাব দে!’,
জুলাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না!’,
ব্যান আওয়ামী লীগ!’,
ইনকিলাব জিন্দাবাদ!
এমন স্লোগানে মুখরিত হয় রাজু চত্বর।

সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ কেবল একজন রাজনৈতিক কর্মী নন, বরং চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি চেতনার নাম। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া ক্ষমতার দাপট এবং ভারতের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থেকেছেন। এই কারণেই তাঁকে নিশানা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবি:
সমাবেশে বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা বলেন, এই হামলা কেবল একজন ব্যক্তির ওপর নয়, বরং ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর চেতনাকে দমনের চেষ্টা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রোজোয়ান আহমেদ রিফাত বলেন:
“আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ—এই নামগুলো এখন রাজনীতির প্রতীক নয়, বরং চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস আর লুটপাটের প্রতীক। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় তারা হাজারো নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। এই সংগঠনগুলোর রাজনীতিতে থাকার কোনো অধিকার নেই।”

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন:
“হাসনাতের ওপর হামলা মানে পুরো জুলাই আন্দোলনের ওপর হামলা। সরকার বারবার প্রমাণ করেছে, তারা জনগণের পাশে নেই বরং ভারতের প্রেসক্রিপশনেই চলছে। আমরা বলে দিতে চাই—এ দেশে দিল্লির রিমোট কন্ট্রোলে রাজনীতি চলবে না।”

তিনি আরও বলেন, “যদি সরকার অবিলম্বে ‘জুলাই প্রোক্লেমেশন’ ঘোষণা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ছাত্রসমাজ রাজপথে নামবে এবং আরেকটি অভ্যুত্থান ঘটাতে পিছপা হবে না।”

প্রতিবাদের পরিণতি কী হতে পারে?
বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ধরনের অরাজনৈতিক ছাত্র আন্দোলন একটি নতুন মাত্রা সৃষ্টি করছে। যেখানে ছাত্ররা কেবল নৈতিক অবস্থানে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলা এবং এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উত্তাল বিক্ষোভ—দুটি ঘটনাই সামনের দিনগুলোতে দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে।


রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের আস্থাহীনতার প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ শুধু একটি ঘটনার প্রতিবাদ নয়, বরং একটি নতুন রাজনীতির ইঙ্গিত। এখন দেখার বিষয়, সরকার এই দাবিগুলো কীভাবে মোকাবিলা করে এবং আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেয় কিনা।

No se encontraron comentarios


News Card Generator