হাসনাত আব্দুল্লাহর বিস্ফোরক মন্তব্য: ‘নৌকা ডুবে গেছে, আর কখনো ভাসবে না আওয়ামী লীগ’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব হাসনাত আব্দুল্লাহর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বড় ধরনের মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক শেষে তিনি বলেন, "যে নৌকা ডুবে গেছে, সে নৌকা আর ভাসবে না।" তার এই মন্তব্যটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, যেখানে তিনি আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বৈঠকে হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও উল্লেখ করেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রায় বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ছাত্ররা জনরায়ের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ বর্তমানে আর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে প্রাসঙ্গিক নয়। হাসনাত বলেন, “আমরা সবাই একমত যে, পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে আওয়ামী লীগ আর কখনোই স্থান পাবে না।” আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব বৈঠকে হাসনাত আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমরা সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি যে, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করা হোক। নিবন্ধন বাতিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করা হবে, যাতে তারা ভবিষ্যতে আর কোনোভাবে ফাংশনাল হতে না পারে।" এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রায় একটি ইনস্টিটিউশনাল রায় হিসেবে পরিগণিত হবে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের রাজনৈতিক কাঠামোকে নতুন দিকনির্দেশনা দেবে। তিনি বলেন, "আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে, আওয়ামী লীগের অপসংস্কৃতি এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আচরণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে আর ফিরে আসতে দেওয়া যাবে না।" ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, "ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে ইতিবাচকভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে। আমাদের মধ্যে কিছু আর্গুমেন্ট, ডিবেট থাকতে পারে, তবে সেগুলোর সমাধান রাজপথে হবে, সংসদে হবে।" তিনি আরও জানান যে, তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক ভাবনা দেখছেন এবং সবার মধ্যে একমত রয়েছে যে, বাংলাদেশের উন্নতি এবং শোষণের অবসান ঘটানোর জন্য আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় করা হবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন হাসনাত আব্দুল্লাহর এই মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার এই প্রস্তাব রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই এই প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর ফলে দেশের রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে নানা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে হাসনাত আব্দুল্লাহর এই মন্তব্য রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। দেশবাসীর কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে এবং তাদের প্রতি জনগণের মনোভাব কী ধরনের পরিবর্তন আনবে।