হামাসকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি গ্রহণ করার আহ্বান ট্রাম্পের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ইসরাইল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে, হামাসকেও চুক্তি গ্রহণ করতে হবে, না হলে সংকট আরো বাড়বে।..

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গড়ে ওঠা একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই চুক্তি ইতিমধ্যেই ইসরাইলের পক্ষ থেকে গৃহীত হয়েছে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে চুক্তি মেনে নেওয়া এখনো হয়নি। ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, হামাস যদি এই চুক্তি গ্রহণ না করে তবে মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই সুযোগ হাতছাড়া হলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ পরিণতি আসতে পারে।

ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, এই যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন শান্তির দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে, যা দীর্ঘদিন ধরে টানা সংঘর্ষের অবসান ঘটাবে। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি পরবর্তী সময়ে আরও সম্প্রসারণযোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রক্রিয়ার ভিত্তি গড়ে তুলতে সক্ষম।

এদিকে গাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নিয়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, জিএইচএফ ত্রাণ সরবরাহ কার্যক্রমে অন্য সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করছে এবং তাদের কর্মীদের ঘিরে রেখেছে মার্কিন ও ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে অন্য ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। সংস্থাগুলো দাবি করেছে, জাতিসঙ্ঘের নির্দেশনা অমান্য করে জিএইচএফ কাজ করছে, যা মানবিক ত্রাণ কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নষ্ট করছে।

ইসরাইলের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, জিএইচএফ বাদ দিয়ে অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোই ত্রাণ সরবরাহ করছে, যা কিছু ক্ষেত্রে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগামী সোমবার হোয়াইট হাউসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এই বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন বিষয়ে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করা হবে। মার্কিন প্রশাসন আশা করছে, এই বৈঠকের পর হামাসও শান্তিচুক্তি মেনে নিয়ে সংঘর্ষ বন্ধ করবে।

এর আগেও ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু তাতে কোনো স্থায়ী ফলাফল আসেনি। ইসরাইল তখনও গাজায় আক্রমণ চালিয়ে গেছে। তবে এবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির বয়ান ও কার্যকারিতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে এটি বাস্তবায়নযোগ্য।

মধ্যপ্রাচ্যে বহু বছর ধরে চলা এই সংঘর্ষের পেছনে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতিগত বহু জটিলতা জড়িয়ে আছে। কিন্তু এই ধরনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি অঞ্চলটিতে সাময়িক হলেও শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে। ট্রাম্পের এই নতুন প্রস্তাবনাটি যদি সফল হয়, তবে এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যত শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

তবে প্রশ্ন থেকে যায়, হামাস কি এই প্রস্তাবনাকে গ্রহণ করবে? না হলে পরিস্থিতির অবনতি হবে কি না? ভবিষ্যত দিনগুলোই সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে।

Hiçbir yorum bulunamadı