close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

হাজতখানার টয়লেটে পড়ে রক্তাক্ত কামরুল ইসলাম

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে এসে আদালতের হাজতখানায় টয়লেটে পড়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত হয়েছেন। গুরুতর অসুস্থ এই রাজনীতিককে দ্রুত কেরানীগঞ্জ কারাগারের হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘট..

ঢাকা, ২৬ মে — দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কারাবন্দি থাকা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম আজ আদালতের হাজতখানার টয়লেটে পড়ে মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। ফলে মাথার পেছনে গুরুতর রক্তপাত হয় এবং দ্রুত তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। এই ঘটনাটি শুধু তার শারীরিক অবস্থা নয়, বরং বন্দিদের নিরাপত্তা ও যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার বিষয়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

সোমবার (২৬ মে) সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কামরুল ইসলামের আইনজীবী নাসিম মাহমুদ। তিনি জানান, "গত বছরের নভেম্বর থেকে কামরুল ইসলাম জেলহাজতে আটক রয়েছেন। তিনি আগে থেকেই গুরুতর অসুস্থ, বিশেষ করে পাকস্থলীর ক্যানসারে আক্রান্ত। জেলে থাকার কারণে তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। ওজনও দ্রুত কমে যাচ্ছে। আজ আদালতে হাজিরা দিতে এসে তিনি টয়লেটে পড়ে মাথায় আঘাত পান এবং রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরে হাজতখানায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মাথায় ব্যান্ডেজ করে তাকে কারাগারের হাসপাতালে নেওয়া হয়।"

দুদকের অভিযোগ ও মামলার প্রেক্ষাপট:
গত ২৩ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। এরপর চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, কামরুল ইসলামের নামে থাকা ১৫টি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়েছে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সেইসঙ্গে এসব হিসাব থেকে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবগুলোতে মোট ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জমা আছে। এত বিপুল অর্থের উৎস সম্পর্কে তিনি কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বলে দুদক অভিযোগ এনেছে।

স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তা প্রশ্নে বিতর্ক:
একজন গুরুতর অসুস্থ ও ক্যানসার আক্রান্ত রাজনীতিককে জেলহাজতে দীর্ঘ সময় ধরে রাখার কারণে তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় হাজতখানার মতো অনিরাপদ পরিবেশে পড়ে গিয়ে রক্তাক্ত হওয়া শুধুই একটি দুর্ঘটনা নয়— এটি কারাবন্দিদের মানবাধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়টিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মামলা ও কারাবাসের প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও মানবিক ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। চিকিৎসার প্রয়োজন থাকা অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।


কামরুল ইসলামের এই টয়লেট দুর্ঘটনা কেবল একজন রাজনীতিকের শারীরিক বিপর্যয় নয়, বরং এটি গোটা বিচার ও কারাগার ব্যবস্থাপনার মানবিক দিকটি নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলছে। আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে যদি একজন অসুস্থ ব্যক্তি রক্তাক্ত হন, তবে আমাদের ব্যবস্থার কোথায় যেন বড় ধরণের ফাঁক রয়েছে— সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

Keine Kommentare gefunden