নিজস্ব প্রতিবেদক-
জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁও গ্রামে উপজেলা সদর থেকে ৩ কি.মি দক্ষিণ—পশ্চিমে রামরায় দিঘি অবস্থিত। উপজেলা শহর থেকে চার্জার ভ্যানে করে ২০ টাকা ভাড়ায় রামরায় দিঘিতে যাওয়া যায়। প্রাচীন ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন রামরায় দিঘি বরেন্দ্র ভূমির প্রাচীন জলাশয়গুলির মধ্যে আয়তনে দ্বিতীয় বৃহত্তম। পুকুরটি ১৮.৩৪ একর সু—উচ্চ পাড় ও ২৩.৮২ একর জলভাগসহ মোট ৪২.২০ একর বিশিষ্ট। পুকুরটির দৈর্ঘ্য (উত্তর—দক্ষিণ) ৯০০ মিটার ও প্রস্থ (পূর্ব—পশ্চিম) ৪০০ মিটার। এর সঠিক ইতিহাস এখনো জানা যায়নি। ধারণা করা হয় দিঘিটি পাঁচশ থেকে হাজার বছরের পুরনো হতে পারে। একসময় এই দিঘি ছিল এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের পানির চাহিদা পূরণের উৎস। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শন যা প্রচারণার অভাবে মানুষের নিকট পৌছায়না এমনি একটি ইতিহাসের নাম রামরায়। পুকুরটিকে কেন্দ্র করে ২০০৩ সালে রাণীসাগর ফাউন্ডেশন নামে একটি সেচ্ছসেবী প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। সেই ফাউন্ডেশনের উদ্দ্যেগে পুকুরটির পাড়ে ১২০০ এর অধিক লিচু গাছ সহ অন্যান্য ফলবান বৃক্ষ ও বিভিন্ন ভেষজ ও বনজ বৃক্ষের চারা রোপন করা হয়েছে। প্রতিবছর লিচু গাছের ফল বিক্রয় করে ফাউন্ডেশন কর্তৃক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত গরীব ও মেধাবী ছাত্র—ছাত্রীদের মধ্যে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। চারিদিকে সবুজের বিশাল সমারোহ ও দিঘীর টলটলে জলরাশি দেখলে যে কোন প্রকৃতি প্রেমী মুগ্ধ না হয়ে পারে না। পাড়ের লিচু গাছে ও দিঘীর পানিতে বিভিন্ন বর্ণালী পাখির কুজন রামরায়—এর সৌন্দর্যকে আরো অধিক আকর্ষণীয় করে তুলে। রাণীশংকৈল রামরায় দিঘি ঠাকুরগাঁও জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত দিঘিটি পাঁচশ থেকে হাজার বছরের পুরাতন হতে পারে। এর সঠিক ইতিহাস এখনো জানা যায় নি। বর্তমানে, দিঘিটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অনেকেই এখানে ভ্রমণ করেন। প্রতি বছর শীত মৌসুমে ডিসেম্বরের শেষের দিকে ও জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে উত্তর মেরু, ইউরোপ, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, হিমালয়ের পাদদেশ, তিব্বত অঞ্চল থেকে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। সাদা বক, বালিয়া, পানকৌড়ি, ঘুঘু, সারস, রাতচোরা, গাংচিল, পাতিহাঁস, বুনোহাঁস, খঞ্জনা, ওয়ার্বলার, হাড়গিলা, স্নাইপ বা কাদাখাঁচা, কোকিল প্রভৃতি হাজার হাজার পাখির আগমনে দিঘির সৌন্দর্য বেড়ে যায়। উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যেই রামরাই দিঘিকে নান্দনিক রূপ দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দিঘির পাড়ে বসার জন্য চারটি ছাতার ছাউনি, পাঁচটি বসার মাচা, একটি নৌকা, এবং একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়েছে।
close
ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!
没有找到评论