জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি একটি পোস্টে মন্তব্য করেছেন যে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিটি যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, "শুধু নিষিদ্ধের দাবি তোলাটাই সমস্যার সমাধান নয়, আমরা হাড়ে হাড়ে সে শিক্ষা পেয়েছি ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর।" এই বক্তব্যটি তিনি শনিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড সোশ্যাল মিডিয়া আইডিতে পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পরও তার নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, "আমরা দেখেছি, ছাত্রলীগ সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও তাদের নেতাকর্মীরা অবাধে চলাফেরা করছেন, আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশ নিচ্ছেন। পুলিশ মাঝে মাঝে কয়েকজনকে আটক করলেও বাকিরা দ্রুত জামিনে বেরিয়ে আসছে। অর্থাৎ শুধু নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করে কোনো সাইন করা কাগজ ধরিয়ে দিলে সেটা বাস্তবে কার্যকর হবে না।" তিনি আরও বলেন, "এটা এখন প্রমাণিত যে, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার পরেও তারা কোনো নিয়ম মেনে চলছে না।"
এছাড়া, হাসনাত বলেন, "আমরা মনে করি, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি এখন প্রধান দাবিতে পরিণত হওয়া উচিত। যদি সঠিক বিচার হয়, তাহলে আওয়ামী লীগসহ তাদের সব অঙ্গসংগঠন কখনও বৈধ থাকতে পারবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যেভাবে নাৎসি পার্টি নিষিদ্ধ হয়েছিল, ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনগুলোও নিষিদ্ধ হবে এমন একটি নিশ্চিত এবং পরীক্ষিত বিচারিক রায়ে।"
তিনি আরো বলেন, "হ্যাঁ, আমরা একটি কাগজ চাই। তবে সেটা হবে, বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তার সব অঙ্গসংগঠনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে হবে। তাহলে তারা আর মিছিল করে বেরাতে পারবে না।"
এনসিপির এই নেতা পূর্ববর্তী ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং জাতীয় আন্দোলনের দিকে মনোযোগ দিয়ে বলেন, "আমাদের উচিত চূড়ান্তভাবে আওয়ামী ফ্যাসিজমবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা এবং আওয়ামী ফ্যাসিজমের সব রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি ধ্বংস করা। আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ডি-নাজিফিকেশন যেভাবে করেছিলাম, তেমনি বাংলাদেশের বেআওয়ামীকরণ করতে হবে।"
হাসনাত আব্দুল্লাহর এই মন্তব্যগুলো সরাসরি এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আরিফ সোহেলের পোস্টের মাধ্যমে এসেছে, যেখানে তিনি ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর তার নেতাকর্মীদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করেছেন।
এনসিপি নেতার এই পোস্টটি এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, শুধু একটি সাইন করা কাগজের বদলে, ঐতিহাসিক ও বাস্তবসম্মত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণই সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম আন্দোলনের সঠিক পথ হতে পারে।