close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গত ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে: মির্জা আব্বাস

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস দাবি করেছেন, মাত্র ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। তার অভিযোগ—সরকারঘনিষ্ঠরা লুটপাটে মেতে উঠেছে, মিডিয়া স্বাধীনতা নেই, আর জনগণ বঞ্চিত। কুমিল্লায় দলীয় কর্মসূচিতে তিনি বল..

৮ মাসে পাচার ৯০ হাজার কোটি টাকা! মির্জা আব্বাসের বিস্ফোরক বক্তব্যে তোলপাড়

সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। তাঁর দাবি, দেশের অর্থনীতি এখন আর কোনোভাবেই নিরাপদ নয়—এমনকি দেশের স্বাধীনতাও হুমকির মুখে পড়েছে। কুমিল্লার একটি দলীয় কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, "গত ৮ মাসেই ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এমন লুটপাটের নজির আর কোথাও নেই।"

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই বক্তব্য দেন তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, “দেশ এখন পাচারকারীদের কবজায়। সরকারের আশপাশের লোকজন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ব্যাংক লুট, ঘুষ বাণিজ্য, অর্থপাচার—সবকিছুর পেছনে তাদেরই হাত রয়েছে। উপদেষ্টাদের বাবা–চাচারা হঠাৎ করে বিশাল ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন। অথচ এসব নিয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। মিডিয়া তো একেবারেই নীরব।”

মিডিয়ার স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মিডিয়ায় কিছু বলা যায় না। কেউ কিছু লিখলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভয় ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। দেশের সব কিছুই এখন একদল লোকের হাতে—যারা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন কুকুরের মুখ থেকে বাঘের মুখে পড়েছি। একজন সিন্দাবাদের বুড়োর মতো ঘাড়ে চেপে বসেছে, নামতেই চায় না। আমাদের দায়িত্ব এখন—তাকে ঘাড় থেকে নামানো। জনগণের ভোটের অধিকার, ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমরা রাজপথে আছি, থাকব।”

‘ভিক্ষা নয়, পাওনা চাই’—দাবি আব্বাসের

জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই বিএনপি নেতা। তাঁর ভাষায়, “ভিক্ষা চাই না, হিসাবের পাওনা বুঝে নিতে চাই। আমরা মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

'মানবিক করিডোর' প্রসঙ্গে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি

মিয়ানমারের সঙ্গে 'মানবিক করিডোর' প্রসঙ্গে সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত শুধু একটি বৈধ ও নির্বাচিত সরকার নিতে পারে। অনির্বাচিত সরকার দেশের এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। বিএনপি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে।”

তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “মানবিক করিডোর নিয়ে সরকারের গোপন খেলা দেশকে বড় ধরনের বিপদে ফেলতে পারে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও যারা ছিলেন

এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জাকারিয়া তাহের সুমন, কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিরুজ্জামান আমির, সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াছিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উৎবাতুল বারি আবু ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু প্রমুখ।



মির্জা আব্বাসের এই মন্তব্য শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, সাধারণ মানুষের মাঝেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে তার এমন প্রত্যক্ষ অভিযোগ এবং ভবিষ্যতের জন্য হুঁশিয়ারি—উভয়ই রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।

No comments found


News Card Generator