close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

গোপন’ সম্পদের রাজা: মোখলেসুর রহমানের শতকোটি টাকার সাম্রাজ্য ফাঁস!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমানের সম্পদের পরিমাণ কত? আয়কর নথিতে মাত্র ২১ কোটি টাকার হিসাব দিলেও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে শত শত কোটি টাকার সম্পদের তথ্য! ঢ..

শতকোটি টাকার সাম্রাজ্যের রহস্য!

রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে একের পর এক বিলাসবহুল বাড়ি, বাণিজ্যিক ভবন, বিপুল পরিমাণ ব্যাংক ব্যালেন্স ও শত শত বিঘা জমির মালিক তিনি। অথচ কর ফাঁকি দিতে নিজের প্রকৃত সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের (এসবিএসি) বর্তমান চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমানের বিস্ময়কর সম্পত্তির তথ্য!

রাজধানীর গুলশানে ৩৩ কাঠার ওপর ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটসহ দুটি বাড়ি, বনানীতে ফ্ল্যাট এবং তেজগাঁও শিল্প এলাকায় দুটি বাণিজ্যিক ফ্লোরের মালিক তিনি। সারা দেশে তার জমির পরিমাণ ৩০০ বিঘারও বেশি! অথচ আয়কর নথিতে মাত্র ২১ কোটি টাকার সম্পদের হিসাব দেখিয়েছেন!

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মোখলেসুর রহমান আয়কর ফাঁকি দিতে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। নিজের আয়কর নথিতে সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ গোপন করেছেন, তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে সম্পত্তি লিখে রেখেছেন। অথচ বাস্তবে তার এই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে!


কীভাবে শত শত কোটি টাকার মালিক হলেন?

মোখলেসুর রহমান একসময় জেমকন গ্রুপে প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। পরে তিনি নিজে গড়ে তোলেন ছয়টি কোম্পানির সমন্বয়ে ‘বি অ্যান্ড টি গ্রুপ’। তার ব্যবসার মূলধন কোথা থেকে এলো? সরকারি বিভিন্ন সূত্র ও ব্যাংক নথি বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের উৎসের অসংগতি।

রাজধানীর গুলশানে ৫ তলা ও ৭ তলা বাড়ি, বনানীতে ১৫ তলার বাণিজ্যিক ভবন, তেজগাঁওয়ে দুটি বাণিজ্যিক ফ্লোরসহ বিভিন্ন এলাকায় জমি রয়েছে তার। শুধু ঢাকায় নয়, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, পঞ্চগড়ের মতো বিভিন্ন জেলায়ও তার বিশাল পরিমাণ জমি রয়েছে। অথচ আয়কর নথিতে এগুলোর উল্লেখ নেই।

সরকারি হিসাবে ঢাকায় জমির দাম কাঠাপ্রতি ৫০ লাখ টাকা, আর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এক কাঠার দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা। সেই হিসাবে তার সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১৫০ কোটি টাকা! কিন্তু আয়কর নথিতে তিনি মাত্র ২১ কোটি টাকা দেখিয়েছেন।


পরিবারের সদস্যদের নামেও বিপুল সম্পত্তি!

শুধু নিজের নামে নয়, মোখলেসুর রহমান তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামেও বিপুল সম্পদ রেখেছেন। তার স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে বনানীতে একটি ৬ তলা বাড়ি, গুলশানে ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট ও ব্যাংকে কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে।

২৬ বছর বয়সী মেয়ে মায়েশা মালিহার নামে রয়েছে ১৩২ কোটি টাকার সম্পদ! ১০ বছর আগেও যেখানে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৮ কোটি টাকা, সেখানে এখন তা দাঁড়িয়েছে ১৩২ কোটিতে! তার ৩২ বছর বয়সী ছেলে মুশফিকুর রহমানের সম্পদের পরিমাণ ১৫৭ কোটি টাকা! ১২ বছরে তার সম্পদ বেড়েছে ১৩১ কোটি টাকা!


ব্যাংকিং খাতেও স্বেচ্ছাচারিতা!

শুধু কর ফাঁকি নয়, এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ, অনৈতিক নিয়োগ, বেনামি ঋণ অনুমোদনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ৫৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার একটি বিতর্কিত ঋণ অনুমোদনের পর ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদত্যাগ করেন!

এছাড়া তার ব্যাংকে নিজের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিতে নিয়মবহির্ভূতভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন। এমনকি দুদকের মামলায় অভিযুক্ত একজনকে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোরও চেষ্টা করেছেন।


মোখলেসুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রয়োজন!

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “আয়কর নথিতে সম্পদের তথ্য গোপন করা রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সরকারের উচিত দ্রুত তার সম্পদের উৎস এবং কর ফাঁকির বিষয়টি তদন্ত করা।”

বিষয়টি নিয়ে মোখলেসুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার ছেলে মুশফিকুর রহমান জানিয়েছেন, “আমাদের সম্পদের হিসাব সব আইনি প্রক্রিয়ায় করা হয়েছে।”

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মোখলেসুর রহমানের সম্পদের বিষয়টি সরকার যদি সঠিকভাবে তদন্ত করে, তাহলে কর ফাঁকি ও দুর্নীতির বিশাল এক কেলেঙ্কারি সামনে আসতে পারে!

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator