প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) চীনের হাইনানে অনুষ্ঠিত বিওআও ফোরাম এশিয়ার বার্ষিক সম্মেলনের সময় সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনকে তৎক্ষণাৎ আহ্বান জানান, “আমাদের সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আপনার সহায়তা ও পরামর্শ অপরিহার্য”। এই চমকপ্রদ আহ্বান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার প্রেক্ষাপটে ব্যাপক সাড়া ফেলছে।
হাইবার্নের আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বলেন, “আমরা নতুনভাবে শুরু করতে চাই; আমাদের হাতে এখন এক দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে।” তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও উন্নয়নের সংকল্প স্পষ্ট। এই প্রসঙ্গে সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন তার স্মৃতিচারণ করে বলেন, “আমি দিল্লিতে তরুণ কূটনীতিক হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলাম।”
বান কি মুন প্রশংসা করে বলেন, “অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ অগ্রসর হবে। তবে, আমি মনে করি বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রেও আরও উন্নতির সুযোগ আছে।” তিনি বাংলাদেশের অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করে বলে ওঠেন, “এক সময় বাংলাদেশ ও কোরিয়া সমান অবস্থানে ছিল, কিন্তু এখন কোরিয়া অনেক এগিয়ে গেছে।”
বান কি মুন পাশাপাশি কিহাক সঙ, ইয়াংওয়ান কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক উদ্যোগের উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশে কোরীয় বিনিয়োগের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের কোরীয় ইপিজেডের জমি সমস্যার সমাধান কোরীয় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে উৎসাহ যোগাবে।” এছাড়াও, বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ ঘোষণা করেন, আগামী ঢাকা বিজনেস সামিটে কোরিয়া থেকে ২৬ সদস্যের ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল আসবে।
গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্যও বান কি মুনের সহায়তা কামনা করেন। তাঁকে বাংলাদেশের সুবিধাজনক সময়ে সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে উভয় পক্ষ ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক পুনর্নবীকরণ করতে পারে।
এই উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনার সংকেত দেয়, যেখানে জাতীয় স্বার্থের সুরক্ষা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পূর্ণ প্রতিফলন ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।